banner

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

ইসলামি পটভূমিতে বিয়ে : কোরান মাজিদের নির্দেশনা

ইসলাম কেবল একটি ধর্মই নয়; বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। এটি আমাদের ব্যক্তিগত জীবনের মত সমাজ জীবনেরও পুরোপুরি নির্দেশনা প্রদান করে। আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া পেতে হলে আমাদেরকে এসব বিধি-বিধান সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখতে হবে এবং তা পালনে সচেষ্ট হতে হবে। প্রত্যেক মুসলমানের একটি সামাজিক দায়িত্ব হল পারস্পরিক শ্রদ্ধবোধ, সাম্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। এই দায়িত্ব ও কর্তব্যের সূচনা হয় ইসলামি মূল্যবোধের ভিত্তিতে একটি পরিবার গঠনের মাধ্যমে। সুদৃঢ় পারিবারিক বন্ধনের ভিত্তিতে গঠিত একটি পরিশীলিত পরিবার ইসলামি সমাজের কেন্দ্রবিন্দু। এভাবে বিয়ে একজন মুসলমানের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে কাজ করে। এটি ইসলামের পরিশীলিত পারিবারিক জীবনের বুনিয়াদ, যা একজন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে প্রতিযোগিতা নয়; বরং পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠে।

ইসলাম প্রত্যেক ব্যক্তিকে বিয়ে করতে এবং পরিবার গঠন করতে উদ্বুদ্ধ করে। এটি স্বামী ও স্ত্রীর যথার্থ অধিকারের নিরাপত্তা বিধান করে, যারা পরবর্তীতে তাদের ছেলেমেয়ের সুযোগ সুবিধা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে। আর এভাবেই একটি সুস্থ পরিবার ও সুস্থ সমাজ বিনির্মিত হয় এবং সমাজের প্রতিটি সদস্যের অধিকার নিরাপত্তা সংরক্ষিত হয়।

ইসলামি ফিকাহশাস্ত্রে বিয়ে সংক্রান্ত কিছু সাধারণ নীতিমালা বিধৃত হয়েছে। সকল প্রাপ্তবয়স্ক সাধারণ মুসলমানের জন্যে বিয়ে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। যদি কারও মধ্যে স্ত্রী সঙ্গ লাভের বাসনা উদগ্র হয় এবং বিয়ে না করলে পাপে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়, তবে তার জন্যে বিয়ে করা ওয়াজিব। অবশ্য যে ব্যক্তি পরিবারের ভরণ পোষণ প্রদানে অক্ষম কিংবা কোন উপযুক্ত পাত্রী খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয় তার জন্যে বিয়ে করা মাকরূহ (অপছন্দনীয়)।

কোরান মাজিদ আমাদেরকে বিয়ে সংক্রান্ত মৌলিক নীতিমালা প্রদান করেছে এবং রাসূলের সুন্নাহ এ সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা তুলে ধরেছে। নিম্নে কোরান মাজিদের কিছু বুনিয়াদী নীতিমালা তুলে ধরা হল:

কোরান মাজিদের নির্দেশনা
আর তোমরা তোমাদের মধ্যকার অবিবাহিত নারী পুরুষ ও সৎকর্মশীল দাস দাসীদের বিয়ে দাও। তারা অভাবী হলে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে অভাবমুক্ত করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময় ও মহাজ্ঞানী। আর যাদের বিয়ের সামর্থ নেই আল্লাহ তাদেরকে নিজ অনুগ্রহে অভাবমুক্ত না করা পর্যন্ত তারা যেন সংযম অবলম্বন করে। (আন-নূর, ২৪:৩২-৩৩)

এই আয়াত থেকে প্রতীয়মান হয় যে, কেবল দুই কারণে বিয়ে বিলম্বিত হতে পারে; উপযুক্ত সঙ্গী খুঁজে না পাওয়া কিংবা পরিবারের ভরণ পোষণ প্রদানে অক্ষম হওয়া। যদি এই দুই শর্ত পাওয়া না যায় তবে তাহলে বিয়ে করা আল্লাহ তাআলার আদেশে পরিণত হয়, যা পালন ও অনুসরণ করা আবশ্যক।

আর যদি কেউ কোন কারণে বিয়ে করতে না পারে, তাহলে কোরান আমাদেরকে আমাদের প্রবৃত্তির বাসনাকে নিয়ন্ত্রণ ও ইসলামের সংযম ও পবিত্রতার নীতিমালা অনুসরণের আদেশ প্রদান করে। যা উপর্যুক্ত আয়াতের দ্বিতীয় অংশে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। কোরান মাজিদে আরও ইরশাদ হয়েছে:

নিশ্চয় আল্লাহ ইনসাফ, সদাচার ও নিকটাত্মীয়দের দান করার আদেশ দেন এবং তিনি অশ্লীলতা, মন্দ কাজ ও সীমালঙ্ঘন থেকে নিষেধ করেন। তিনি তোমাদেরকে উপদেশ দেন, যাতে তোমরা উপদেশ গ্রহণ কর।

বল, আমার রব তো হারাম করেছেন অশ্লীল কাজ- যা প্রকাশ পায় এবং যা গোপন থাকে, আর পাপ ও অন্যায়ভাবে সীমালঙ্ঘন এবং আল্লাহর সাথে তোমাদের শরিক করা, যে ব্যাপারে আল্লাহ কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেন নি এবং আল্লাহর উপর এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না। (আল-আরাফ, ৭:৩৩)

আর তোমরা ব্যভিচারের কাছে যেয়ো না, নিশ্চয় তা অশ্লীল কাজ ও মন্দ পথ। (বনি ইসরাঈল, ১৭:৩২)

বিয়ের জন্য ইসলাম সর্বপ্রথম যে শর্ত প্রদান করেছে তা হল একজন ঈমানদার কেবল একজন ঈমানদারকেই বিয়ে করতে পারবে। অমুসলিমকে বিয়ে করার অনুমতি ইসলামে নেই। কোরান মাজিদে ইরশাদ হয়েছে :

আর তোমরা মুশরিক নারীদের বিয়ে করো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে এবং মুমিন দাসী মুশরিক নারীর চেয়ে নিশ্চয় উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। আর মুশরিক পুরুষদের সাথে বিয়ে দিয়ো না, যতক্ষণ না তারা ঈমান আনে। আর একজন মুমিন দাস একজন মুশরিক পুরুষের চেয়ে উত্তম, যদিও সে তোমাদেরকে মুগ্ধ করে। তারা তোমাদেরকে আগুনের দিকে আহবান করে, আর আল্লাহ তাঁর অনুমতিতে তোমাদেরকে জান্নাত ও ক্ষমার দিকে আহবান করেন এবং মানুষের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টরূপে বর্ণনা করেন, যাতে তারা উপদেশ গ্রহণ করতে পারে। (আল-বাকারা, ২:২২১)

ইসলাম আহলে কিতাবদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নিয়ম রেখেছে। তা আমাদেরকে ধার্মিক ও পূতঃপবিত্র রমণীদের বিয়ের অনুমতি দেয়, এমনকি আহলে কিতাবদের মধ্য থেকেও। তা আরও বলে যে, এধরনের ক্ষেত্রে কোন অসদিচ্ছা কিংবা জাগতিক সম্পদ অর্জন উদ্দেশ্য থাকবে না। বরং, পবিত্রতার সংরক্ষণই হবে মূল উদ্দেশ্য। কোরান মাজিদে ইরশাদ হয়েছে :

আর মুমিন সচ্চরিত্রা নারী ও তোমাদের পূর্বে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছে, তাদের সচ্চরিত্রা নারীদের সাথে তোমাদের বিবাহ বৈধ। যখন তোমরা তাদেরকে মোহর দেবে, বিবাহকারী হিসেবে, প্রকাশ্য ব্যভিচারকারী কিংবা গোপনপত্নী হিসেবে নয়। (আল- মায়েদা, ৫:৫)

এই আয়াত থেকে পরিষ্কার হয় যে, প্রথম যে গুণ কোন ব্যক্তি একটি পাত্রীর মধ্যে অনুসন্ধান করবে তা হল চারিত্রিক পবিত্রতা ও ধর্মানুরাগিতা। কোরান মাজিদ আমাদেরকে এ বিষয়েও সতর্ক করে যে, যদি আমরা একজন পূতঃপবিত্র ও ধার্মিক পাত্রী কামনা করি তবে আমাদেরকেও আমাদের আচার আচরণে পরিশুদ্ধ ও উত্তম চরিত্রের অধিকারী ধার্মিক হতে হবে। আল-কোরানে ইরশাদ হয়েছে :

দুশ্চরিত্রা নারীরা দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষরা দুশ্চরিত্রা নারীদের জন্য। আর সচ্চরিত্রা নারীরা সচ্চরিত্র পুরুষদের জন্য এবং সচ্চরিত্র পুরুষরা সচ্চরিত্রা নারীদের জন্য; লোকেরা যা বলে, তারা তা থেকে মুক্ত। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও সম্মানজনক রিয্ক। (আন্ নূর, ২৪:২৬)

এসব আয়াত থেকে বুঝা যায়, ইসলামে বিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে কিছু সাধারণ বিশ্বাস ও সমন্বিত মূল্যবোধের ভিত্তিতে কায়েম হয়ে থাকে। এগুলো বিয়ের মূল বুনিয়াদ ও ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। যতদিন এই ভিত্তি বিদ্যমান থাকে তাদের মধ্যে মায়া মমতা বৃদ্ধি পেতে থাকে। একারণে ইসলামে বিয়ে একটি খুব টেকসই প্রতিষ্ঠান। পক্ষান্তরে, পশ্চিমা সমাজে বিয়ে কেবল তুচ্ছ ভালবাসা ও নারী পুরম্নষের মধ্যে প্রণয়মূলক আকর্ষণের ভিত্তিতে সম্পন্ন হওয়া একটি বিষয়। যখন একজন পুরুষ ও নারীর মধ্যে ভালবাসা চরম পর্যায়ে পৌঁছে তখন তা তাদের বিয়ের ক্ষেত্রে মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। এভাবে তাদের সমাজে পুরো বিয়ের প্রতিষ্ঠানটি গড়ে ওঠে একটি বৈষয়িক আবেগ-উচ্ছাসের ভিত্তির উপর। বাস্তবতা প্রমাণ করে যে, এটি বিয়ের জন্যে একটি নেহায়েত দুর্বল ও নড়বড়ে ভিত্তি।

ইসলামে একাধিক বিয়ে
ইসলামে কতিপয় শর্ত সাপেক্ষে একাধিক বিয়ের অনুমতি রয়েছে। বস্ত্তত: কোরান মাজিদ এই শর্তে কোন ব্যক্তিকে তার অনুমতি দেয় যে, তাকে অবশ্যই সকল স্ত্রীর সাথে ন্যায্য আচরণ করতে হবে। যদি কেউ ভয় করে যে, সে তা করতে পারবে না, তখন তাকে কেবল একজন স্ত্রী নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। কোরান মাজিদ বলে:

আর যদি তোমরা আশংকা কর যে, ইয়াতিমদের ব্যাপারে তোমরা ইনসাফ করতে পারবে না, তবে তোমরা বিয়ে কর নারীদের মধ্য থেকে যাকে তোমার ভাল লাগে; দুটি, তিনটি অথবা চারটি। আর যদি ভয় কর যে, তোমরা সমান আচরণ করতে পারবে না, তবে একটি অথবা তোমাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে। এটা অধিকতর নিকটবর্তী যে, তোমরা যুলম করবে না। (আন-নিসা, ৪:৩)

একাধিক বিয়ে সমাজকে অনেক দুষ্কর্ম থেকে রক্ষা করে। যাদের অতিরিক্ত শারিরীক চাহিদা রয়েছে, তাদেরকে এই আয়াত একাধিক স্ত্রী রাখার অনুমতি প্রদান করে, যা সমাজকে ধর্ষণ, ব্যভিচার, অনাচার ইত্যাদির মত নানা অপকর্ম এবং সকল প্রকার সামাজিক ষড়যন্ত্র ও হিংসা বিদ্বেষ থেকে রক্ষা করে। একাধিক বিয়ে সমাজে অনেক নারীর অধিকারকেও সংরক্ষণ করে। একজন নারী দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত হয়ে তার বৈবাহিক দায়িত্ব পালনে অক্ষম হতে পারে। তাছাড়া, কোন কোন ক্ষেত্রে একজন স্ত্রী স্বামীর ইচ্ছানুসারে সন্তান ধারণ করতে পারে না, একাধিক বিয়ের বিধি এমন নারীদেরকে তালাক প্রদানের অনুমতি নয়, বরং দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি প্রদান করে। অধিকন্তু, যুদ্ধের কারণে অনেক সময় পুরুষের চেয়ে নারীর সংখ্যা অধিক হয়ে থাকে কিংবা পিতাহারা সন্তানসহ অনেক বিধবা নারী থাকে। একাধিক বিয়ের বিধান তাদেরকে তাদের সন্তানসহ দ্বিতীয়বার পরিবার গঠনের সুযোগ করে দেয়। সর্বোপরি, একাধিক বিয়েপ্রথা সমাজ থেকে পতিতাবৃত্তির মত দুষ্কর্ম উচ্ছেদ করতে সহায়তা করে। উল্লেখ্য যে, স্বাভাবিক অবস্থায় একাধিক বিয়ে না পছন্দনীয়, আর না তার প্রতি ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে। অধিকন্তু, ইসলাম একজন স্ত্রীকে তার বিবাহ ভেঙ্গে ফেলার অধিকার দিয়েছে, যদি সে তার স্বামীর কাছে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে থাকতে অপছন্দ করে। এজন্যেই বস্ত্ততঃ মুসলিম সমাজে একাধিক বিয়ের প্রচলন রয়েছে।

ইসলাম আরও বলে যে, একজন স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে সর্বাধিক অন্তরঙ্গ ও প্রেমময় সম্পর্ক থাকতে হবে। প্রত্যেককে অপর সঙ্গীর স্বার্থ সংরক্ষণ, গোপনীয়তা রক্ষা ও তার নিরাপত্তা বিধান করতে হবে। কোরান মাজিদ বলে:

তারা তোমাদের পোশাক এবং তোমরা তাদের পোশাক। (আল-বাকারা, ২:১৮৭)

এই আয়াতটি ইসলামে বিয়ের মৌলিক ধারণার বর্ণনা প্রদান করে।

প্রথমত, পুরুষ ও নারীকে বিবেচনা করা হয়েছে পরস্পর পরস্পরের পোশাক হিসেবে, যা নির্দেশ করে যে, বিয়ের দায়িত্ব ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে উভয়ের সমান মর্যাদা রয়েছে।

দ্বিতীয়ত, পোশাক শরীরকে এমনভাবে আবৃত করে যে, পোশাক ও শরীরের মধ্যে কোন অন্তরাল থাকে না। স্বামী এবং স্ত্রীকেও এমন কাছাকাছি ও অন্তরঙ্গ হতে হবে যে, তাদের মধ্যে কোন গোপনীয়তা থাকবে না। উভয়কে পরস্পরের উপর পূর্ণরূপে বিশ্বাস রাখতে হবে এবং স্ব স্ব জীবনের কোন বিষয়কে গোপন রাখা যাবে না।

তৃতীয়ত, পোশাকের কাজ হল, শরীরকে বাহ্যিক বিপদাপদ ও ক্ষতিকর বিষয় থেকে রক্ষা করা। অনুরূপভাবে, স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরকে সব ধরনের বাহ্যিক বিপদাপদ থেকে রক্ষা করবে।

চতুর্থত, একটি পোশাক কেবল শরীরকে আচ্ছাদিতই করে না, বরং তার সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে থাকে। অনুরূপভাবে, স্বামী ও স্ত্রী পরস্পরকে আচ্ছাদন ও প্রতিরক্ষার চেষ্টাই করবে না, বরং তার সম্মান ও মর্যাদা বৃদ্ধির চেষ্টাও করবে।

উপরন্তু পোশাক ব্যতিত কেউ থাকতে পছন্দ করে না। অতএব পুরুষদেরকে নারীদের বিয়ে করার প্রতি উৎসুক থাকতে হবে যাতে একে অপরকে পোশাকের ন্যায় উপকৃত করতে পারে। কোরান মাজিদ আরও বলে,

আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই সৃষ্টি করেছেন স্ত্রীদেরকে, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য যারা চিন্তা করে। (আর-রূম, ৩০:২১)

তিনিই সেই সত্ত্বা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক ব্যক্তি থেকে এবং তার থেকে বানিয়েছেন তার সঙ্গিনীকে, যাতে সে তার নিকট প্রশান্তি লাভ করে। (আল আরাফ, ৭:১৮৯)

এই আয়াতগুলো ইসলামে বিয়ের রঙ-রূপ সম্পর্কে আরও সবিস্তার বিবরণ প্রদান করে। এটি পারস্পরিক ভালবাসা, সঙ্গ ও সুসামঞ্জস্যপূর্ণ ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়ার সম্পর্ক। স্বামীর মধ্যে স্ত্রী এমন এক ব্যক্তিকে খুঁজে পায় যার সাথে সে তার ভালবাসা ভাগাভাগি করতে এবং যার কাছে সে তার নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা কামনা করতে পারে। অনুরূপভাবে, স্বামীও একটি শান্তিপূর্ণ নীড় ও প্রাত্যহিক জীবনের দুঃখ কষ্ট থেকে বেরিয়ে একটি প্রশান্তিপূর্ণ আশ্রয়স্থল রচনা করতে স্ত্রীর সহযোগিতা ও স্বান্তনা কামনা করে।

মূল : ড. মাজহার ইউ কাজি
বাংলা অনুবাদ : মাওলানা ফয়জুল্লাহ মুজহিরি
সম্পাদনা : ড. মাওলানা শামসুল হক সিদ্দিক

 

রমজান মাসে বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াত করলে কি হয় ?

যারা ঈমানদার, তারা যখন আল্লাহর নাম নেয়, নরম হয় তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে কুরআন পাঠ করা হয়, তাদের ঈমান সজীব হয়ে ওঠে, তারা মওলার প্রেমে আত্মনিবেদিত হয়। (সুরা আনফাল : ২)

দুয়ার খুলেছে রহমতের। শুরু হলো রমজান। রহমতের উৎসব। রমজানের অবারিত রহমতে ভরে যাক আমাদের জীবন। যে কুরআনের প্রেমময়তায় আজ রমজান রহমতে ভরপুর, কুরআনের মুগ্ধতায় লাইলাতুল কদর হাজার মাসের শ্রেষ্ঠ রাত! কুরআন এসেছিল বলে মক্কা-মদিনা পৃথিবীর মর্যাবান শহর! কুরআনের নবি হজরত মুহাম্মদ নবিদের সরদার! কুরআনের সেই প্রেম, মুগ্ধতা ও মর্যাদা আমাদের কতোাঁ আলোকিত করেছে?

মাস, রাত আর মক্কা-মদিনার মর্যাদা বাড়াতে কুরআন আসেনি পৃথিবীতে। কুরআন এসেছে মানুষের জীবন রাঙাতে। শুধু রাত শ্রেষ্ঠ হবে না; কুরআনের মানুষেরাও হবে আশরাফুল মাখলুকাত। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠতম মানুষ। কুরআন সে তো আল্লাহ প্রেমের চিঠি। পাঠে পাঠে সজীব হয় দেহমন। যোগায় আত্মিক শক্তিও। প্রেমের চিঠি প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালাও বলেন,

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ الَّذِينَ إِذَا ذُكِرَ اللَّهُ وَجِلَتْ قُلُوبُهُمْ وَإِذَا تُلِيَتْ عَلَيْهِمْ آيَاتُهُ زَادَتْهُمْ إِيمَانًا وَعَلَى رَبِّهِمْ يَتَوَكَّلُونَ

যারা ঈমানদার, তারা যখন আল্লাহর নাম নেয়, নরম হয় তাদের অন্তর। আর যখন তাদের সামনে কুরআন পাঠ করা হয়, তাদের ঈমান সজীব হয়ে ওঠে, তারা মওলার প্রেমে আত্মনিবেদিত হয়। (সুরা আনফাল : ২)

পবিত্র রমজানে পৃথিবীর ২৫ লাখ মসজিদে কুরআনুল কারিমের তেলাওয়াত হয়। এদেশের প্রায় ৫ লাখ মসজিদে তারাবির নামাজেও ভাব আবেগ ও মুগ্ধতায় পাঠ হয় পবিত্র কুরআন। হজরত রাসুল সা. বলেন,

عن عبد الله بن مسعود رضي الله عنه قال: قال رسول الله : (من قرأ حرفاً من كتاب الله فله به حسنة، والحسنة بعشر أمثالها، لا أقول: الم حرف، ولكن ألف حرف، ولام حرف، وميم حرف).

অর্থ, কুরআন তেলাওয়াতকারী প্রতিটি বর্ণে দশটি সওয়াব পায়। আমি বলছি না, ‘আলিফ লাম মিম’ এর মধ্যে একটি অক্ষর। বরং আলিফ আলাদা, লাম আলাদা, মিম আলাদ বর্ণ। প্রতিটির জন্য ভিন্ন সওয়াব। (সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৩০৭৫)

সওয়াবের নেশায় রাতজাগা চোখ-কান শুনবে তেলাওয়াত। বরাবরের মতো হাফেজ সাহেবরা কুরআন পাঠ করবেন। আমরা শুনবো। মনভরে উপভোগ করবো কুরআনের সুর। নেকি লাভ করবো। কিন্তু আমরা যদি কুরআনের চর্চায় আত্ম নিয়োগ করি। বিশুদ্ধ পাঠের সঙ্গে সঙ্গে কুরআনের ভাব ভাষা অনুধাবন করি; দীর্ঘ জীবনে আমিও হয়ে ওঠতে পারি কুরআনের একজন ছাত্র। কুরআনের অলিগলি ভ্রমণকারী শিক্ষার্থী। আমাদের যাপিত জীবনে কুরআন হয়ে ওঠবে আরাধ্য।

কুরআনের উৎসবমুখর মাস রমজান। মানুষ হেদায়াতের প্রত্যাশায় মুখিয়ে থাকে। রমজানে মসজিদ ভরে যায় মুসল্লিতে। ফরজ নামাজ তো বটেই, তারাবি হয়ে ওঠে কুরআনের উৎসব। ইফতার উপলক্ষেও কানায় কানায় ভরে যায় মসজিদ। রোজার জুমায় মানুষের ঢল। কিয়ামুল লাইল বা শেষ রাতের তাহাজ্জুদেও মসজিদ প্রাণবন্ত থাকে। মসজিদমুখী মানুষেরা কুরআনের আলোয় জীবন রাঙাতে চায়। হেদায়াতের নেশায় ব্যাকুল মানুষেরা শুনতে চায় কুরআনের মর্মকথা। কুরআনের ইতিহাস ও গল্পে ফিরে যেতে চায় আগের নবি-রাসুলদের জীবনে। জান্নাতের হৃদয়কাড়া বর্ণনা ও জাহান্নামের ভয়াবহতা কুরআনের ভাষায় স্বাদ নিতে চায় মানুষেরা। কুরআনের পরিবার ও সমাজনীতি শিখতে চায় মুসল্লিরা। ইসলামের জীবন সৌন্দর্য্য কুরআনে কিভাবে আছে? আধুনিক জ্ঞান-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনায় কুরআনের মনোভাব কী? এমনসব প্রশ্নের জবাব জানতে আগ্রহী মানুষেরা। আল্লাহর প্রেমে মজে থাকার এই প্রেমপত্র পাঠ করে বুঝতে চায় অভাগারা। কিন্তু কই? কে শোনাবে তাদের কুরআনের গল্প? কে দিবে কোটি পিপাসার্ত হৃদয়ে কুরআনের সবক?

দেশের প্রতিটি মসজিদে ইমাম-খতিব, বিজ্ঞ আলেম, মুফতি, মুফাসসিরগণ যদি মসজিদমুখী মানুষদের এই প্রত্যাশা পূরণে এগিয়ে আসতেন! সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি মানুষকে কুরআনের ছাত্রে পরিণত করতেন! প্রতিদিন তারাবির আগে-পরে বা অন্য কোনো সময় ধারাবাহিক বলতেন আজকের পঠিত আয়াতের তরজম-তাফসির বা কুরআনের বিশেষ আলোচনা! প্রতিদিন যদি বসতো কুরআনের উৎসব! মানুষ কুরআন চর্চায় অভ্যস্থ হয়ে উঠতো। যাপিত জীবনে আসতো কুরআনিক ছোঁয়া। জীবনে এমন কয়েকটি রমজান পেলে কুরআনময় হয়ে ওঠতো প্রতিটি মানুষের জীবন। রমজান শেষে মুসল্লিশূন্য হতো না মসজিদগুলো। কুরআনের পরশে বছরব্যাপী প্রাণবন্ত থাকতো মানুষের মন। কিন্তু কুরআনের কার্যকর প্রেম, ভালোবাসা, অর্থ ও মর্ম বোঝার গতি ক্রমেই কমে আসছে আমাদের জীবনে। শিল্পনন্দিত মুদ্রিত কুরআন বুকে নয়, আমরা সাজিয়ে রাখি শোকেসে। মাঝে-মধ্যে চুমো খেয়ে সম্মান জানাই। এমনও হয়, শ্রদ্ধাভরে ঘরের কুরআনটি পাঠিয়ে দিই মসজিদে। বাসা-বাড়িতে এত সামগ্রীর ভিড়ে কুরআন রাখবো কোথায়! ওই আদুরে ছেলের মতো, যে মাকে উদ্দেশ্য করে বলে, বাসায় তোমার কষ্ট হয়, বৃদ্ধাশ্রম ভালো লাগবে। বৃদ্ধ বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমের জীবন্ত কবরে পাঠিয়ে ছেলে যে তৃপ্তি পায়, ঘরের কুরআন মসজিদে পাঠিয়েও আমাদের সে রকম উপলব্ধি। সত্যিই কুরআনের মর্মকথা আমরা বুঝি না। খুব সহজে রঙিন মোড়কে আমরা কুরআন পেয়েছি বলে। বুখারি শরিফে আছে-

قال عبد الله بن عباس كنت أنا وجار لي من الأنصار في بني أمية بن زيد وهم من عوالي المدينة وكنا نتناوب النزول على النبي صلى الله عليه و سلم فينزل يوما وأنزل أنا فإذا نزلت جئته بما حدث من خبر ذلك اليوم من وحي أو غيره وإذا نزل فعل مثل ذلك

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বলেন, বনু উম্মায়ার আনসারী প্রতিবেশী ও আমি কুরআনের আয়াতের জন্য পালা বদল করে নবিজির দরবারে আসা যাওয়া করতাম। এমন হতো, একদিন আমি যেতাম, আরেক দিন তিনি। আমরা নবিজির দরবার থেকে শুনে আসা কুরআন পরস্পর শোনাতাম।

একটি আয়াতের জন্য সাহাবির দিনের পর দিন পথে অপেক্ষার কষ্ট আমরা কি অনুভব করতে পারব?

আল্লাহ বলেন,

كِتَابٌ أَنْزَلْنَاهُ إِلَيْكَ مُبَارَكٌ لِيَدَّبَّرُوا آيَاتِهِ وَلِيَتَذَكَّرَ أُولُو الْأَلْبَابِ

এক কল্যাণময় কিতাব আমি অবতীর্ণ করেছি। যাতে মানুষ কুরআন অনুভব করে। বোধসম্পন্ন ব্যক্তিরা তা উপদেশ হিসেবে গ্রহণ করে। (সুরা সদ : ২৯)

মুফতি হুমায়ুন আইয়ুব
প্রিন্সিপাল, জামিয়াতুস সালাম ঢাকা

 

কেমন হওয়া উচিত আপনার বিজনেস কার্ড?

একটি বিজনেস কার্ড শুধু যে আপনার তথ্য দেয় তাই নয় এটির মাধ্যমে আপনি তুলে ধরেন আপনার পরিচয়। তাই যেমন-তেমন করে কখনই বিজনেস কার্ড তৈরি করা ঠিক নয়। বরং কার্ডটি হওয়া উচিত এমন যা আপনার সম্পর্কে সঠিক তথ্য তো দেবেই এর পাশাপাশি আপনার ভিন্নতাকেও তুলে ধরবে অন্যের কাছে কার্ডটিকে এর আকৃতি, রঙ, ধরণ দিয়ে যেমন অনন্য করে তুলতে পারেন তেমনি তথ্যের ক্ষেত্রেও যাতে উদ্দেশ্য সফল হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন।
আসুন জেনে নিই, বিজনেস কার্ডকে অনন্য করতে এর কী কী বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত।
 
১। লোগো এবং ট্যাগলাইন
আপনার বিজনেস কার্ডে অবশ্যই আপনার প্রতিষ্ঠানের লোগো থাকতে হবে। তার সাথে থাকবে একটি ট্যাগ লাইন। এই দুইয়ের সমন্বয়ে যাতে সহজেই বোঝা যায়, আপনার প্রতিষ্ঠানের কাজ কী, এখান থেকে কী কী সেবা পাওয়া যাবে বা যাকে কার্ডটি দিচ্ছেন তার আগ্রহের কী আছে আপনার প্রতিষ্ঠানে। মোট কথা, এক দেখায় যেন পরিচয় হয়ে যায় আগন্তুক ব্যক্তিটির আপনার প্রতিষ্ঠানের সাথে।
 
২। নাম এবং পদবী
অবশ্যই এই দু’টি বিষয় যুক্ত হবে আপনার কার্ডে। তবে আপনার সার্টিফিকেটে যদি এক নাম থাকে আর আপনি যদি সাধারণভাবে অন্য নামে পরিচিত হন তাহলে সেই ডাকনামটি জুড়ে দিন কার্ডে। অবশ্য প্রতিষ্ঠান যদি আপনার নিজস্ব হয় তাহলেই এমনটি করুন। কারণ চাকরীক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক নামেই পরিচিত হতে হবে আপনাকে। নিজের পদবী দিন নামের নিচেই। সেটি হওয়া চাই এমন একটি শব্দ যা প্রকাশ করে আপনার দায়িত্ব।
৩। যোগাযোগের তথ্য
আপনার সাথে যোগাযোগের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য দিন। তবে কয়েকটি ইমেইল আইডি ব্যবহার করলে প্রত্যেকটিই দেবেন না ভুলেও। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে যে আইডিটি ব্যবহার করেন সেটিই দিন কেবল। ফোন নম্বরের ক্ষেত্রেও তাই করুন।
৪। ওয়েবসাইট
বিজনেস কার্ডে আপনার ওয়েব এড্রেস দিন। কিন্তু আপনি নিশ্চই চান আপনার এড্রেসটি টাইপ করে মানুষটি আপনাকে খুঁজে বের করুক। সেজন্য খেয়াল করুন আপনার ওয়েবসাইটের URL যেন ছোট হয়, সহজেই টাইপ করা যায়।
৫। সোশ্যাল মিডিয়া প্রফাইল
আপনার ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন সব মিলিয়ে ৮/১০টি প্রফাইল থাকতে পারে। কিন্তু বিজনেস কার্ডে কি তার সবই তুলে দেবেন? বিজনেস কার্ড যথাসম্ভব সিম্পল হওয়া খুবই জরুরি। তাই শুধু সেই প্রফাইলের লিঙ্কটিই দিন যা আপনার ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব তুলে ধরে।
৬। White Space
বিজনেস কার্ডে হোয়াইট স্পেস থাকা খুবই জরুরি। কার্ডটি কোন ভাবেই যেন চোখে বিরক্তি তৈরি না করে। আপনার লেখার ফন্ট, রঙ, অবস্থানে এমন সমন্বয় থাকা জরুরি যাতে সেটি দৃষ্টিনন্দন হয়। এবং অবশ্যই যেন কিছু অংশ ফাকা থাকে। এর মানে এই নয় যে, কার্ডটির একটি অংশ সাদা থাকবে। রঙ যে কোনটাই হতে পারে, প্রয়োজন ফাকা কিছু জায়গা যা কার্ডের সিমপ্লিসিটি বজায় রাখে।
৭। সৃষ্টিশীলতা
কার্ডটি অন্য আর দশজনের বিজনেস কার্ডের মাঝে বিশেষ করে স্মরনীয় করতে এত যোগ করুন কিছু সৃজণশীল আইডিয়া। রংটি হতে পারে এমন যাতে আলাদা করে মনে থাকে, চোখে লাগে লোগোটি। অথবা ভিন্নতা আসতে পারে আকারে। সবার কার্ড কেন হতে হবে একঘেয়ে চারকোণা? একটা ভিন্ন আইডিয়ার কার্ড মুহুর্তেই আপনার এবং আপনার প্রতিষ্ঠানের সম্পর্কে আগ্রহ বাড়িয়ে দেবে অপরিচিত মানুষটির।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

খুব সহজে তৈরি করুন মজাদার চিকেন টিক্কা

চিকেন টিক্কা কাবাবের নাম শুনলেই জিভে পানি চলে আসে। অনেকেই রেস্টুরেন্টে গেলে এই খাবারটি অর্ডার করে থাকেন। নান রুটি, পরোটা, এমনকি সাধারণ রুটির সাথে মানিয়ে যায় এই খাবারটি। কিন্তু সবসময় রেস্টুরেণ্টে যাওয়া সম্ভব হয় না। তখন উপায়? আপনি চাইলে খুব সহজে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারেন দারুন স্বাদের চিকেন টিক্কা কাবাব। আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক চিকেন টিক্কা কাবাবের সহজ রেসিপিটি।

উপকরণ:

  • ৩০০ গ্রাম হাড়ছাড়া মুরগির বুকের মাংস (কিউব করে কাটা)
  • ১ টেবিল চামচ ধনিয়া গুঁড়ো
  • ১ চা চামচ মরিচ গুঁড়ো
  • ১/২ চা চামচ গরম মশলা
  • লবণ
  • ১ টেবিল চামচ আদা রসুনের পেস্ট
  • ৪ টেবিল চামচ টকদই
    ১টি লেবুর রস
  • ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল
  • ১টি পেঁয়াজ কিউব করে কাটা
  • ১টি ক্যাপসিকাম কিউব করে কাটা
  • ২ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি
  • এক চিমটি খাবারের রং

প্রণালী:

১। একটি পাত্রে মুরগির মাংস, টকদই, পেঁয়াজ, ক্যাপসিকাম, গরম মশলা, মরিচ গুঁড়ো, ধনিয়া গুঁড়ো, লবণ, আদা রসুনের পেস্ট এবং লেবুর রস দিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন।

২। এরপর এতে অলিভ অয়েল, ধনেপাতা কুচি, খাবারের রং দিয়ে আরও কিছুক্ষণ মাখুন।

৩। মুরগির মিশ্রণটি মেরিনেট করার জন্য ফ্রিজে ২-৩ ঘন্টা রেখে দিন। যতো বেশি সময় ফ্রিজে রাখতে পারবেন তত ভাল।

৪। এবার শাসলিক কাঠি বা শিকে মেরিনেট করা মুরগির টুকরো, ক্যাপসিকামের টুকরো এবং পেঁয়াজের টুকরো দিয়ে সাজিয়ে নিন।

৫। ওভেন ২৫০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে প্রি হিট করে নিন।

৬। এবার কাবাবের কাঠিগুলো ওভেনে ১৫-২০ মিনিট বেক করুন। মাংস নরম হয়ে বাদামী রং হয়ে এলে বের করে ফেলুন।

৭। আপনি চাইলে এটি গ্যাসের চুলায় করতে পারেন। গ্যাসের চুলায় একটি গ্রিল ফ্রাইংপ্যান নিয়ে এতে তেল ব্রাশ করে এতে কাবাবের কাঠিগুলো ঘুরিয়ে ভাল করে রান্না করে নিন।

৮। ব্যস তৈরি হয়ে গেল মজাদার চিকেন টিক্কা কাবাব।

 

ঈদ আয়োজনে নিপুণের সম্ভার

ঈদের কেনাকাটায় ব্যস্ত হবার সময় চলে এসেছে। আপনার ঈদ আয়োজনে সঙ্গী হতে পছন্দসই পোশাকের সম্ভার নিয়ে হাজির হয়েছে দেশের অন্যতম দেশীয় ফ্যাশন হাউজ নিপুণ।

ফ্যাশনেবল, আরামদায়ক একইসঙ্গে দৃষ্টিনন্দন সব পোশাক রয়েছে এবারে নিপুণে। বাড়ির ছোট বড় সবার জন্য একই ছাদের নিচে পোশাক পাচ্ছেন নিপুণে। নিপুণ এবারের ঈদের পোশাক তৈরিতে বেছে নিয়েছে এন্ডি কটন, জয়সিল্ক, তাঁত, লিলেন, ভয়েল, স্ল্যাব-কটন, মসলিন কাপড়।

নিপুণের কাপড়ে করা হয়েছে হ্যান্ড অ্যাম্ব্রয়ডারি, মেশিন অ্যাম্ব্রয়ডারি, এপ্লিক, ব্লক প্রিন্ট এবং স্ক্রিণ প্রিন্ট। আর পোশাক হিসেবে রয়েছে শাড়ি, সালোয়ার কামিজ, ফতুয়া, কুর্তি, পুরুষের জন্য পাঞ্জাবি, হাফ স্লিভ প্রিন্টেড শার্ট, শিশুদের জন্য ফ্রক, স্লিভলেস ফতুয়া, ছেলে শিশুর পাঞ্জাবি, টিনএজারদের জন্য ফ্রক, পাঞ্জাবি।

ঈদ কালেকশনের সব পোশাকই পাওয়া যাচ্ছে নিপুণের সবগুলো শো-রুমে।

 

আটক রবিনই অনুসরণকারী যুবক?

চট্টগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যায় ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ যুবক শাহজামান ওরফে রবিনকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, রবিনই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে ধরা পড়া অনুসরণকারী যুবক।

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি)  নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান কমিশনার ইকবাল বাহার। তিনি জানান, শনিবার সকালে রবিন নামে এই যুবককে নগরীর বায়েজিদ থানার শীতলঝর্ণা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, রবিন লাকসামের জনৈক শাহজাহানের পুত্র। পড়াশুনা করেছে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘড়ির কাঁটায় তখন ৬টা ৩২ মিনিট। এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু তার সন্তান মাহিরের হাত ধরে গলির মুখে এসে পৌঁছান। ঠিক এর ১৫ সেকেন্ড পর বিপরীত প্রান্তে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আগে থেকেই অপেক্ষায় থাকা এক যুবক মোবাইলে কথা বলতে বলতে তাকে অনুসরণ করে পেছন পেছন হাঁটতে থাকেন।

৬টা ৩২ মিনিট ১৪ সেকেন্ডে তিনি ওয়েল ফুডের সামনে পৌঁছানোর সাথে ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে পেছন থেকে দৌঁড়ে মিতুর দিকে এগিয়ে যায় ঘাতক। ঠিক একই সময়ে মোটরসাইকেল নিয়ে আগে থেকেই নিরিবিলি হোটেলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবক মিতুর উপর হামলা করে। হামলা শুরু এবং শেষ করে মোটরসাইকেলে উঠতে ঘাতকরা সময় নিয়েছে মাত্র ১৭ সেকেন্ড! এর মধ্যে মাহমুদা খানম মিতুর শরীরে করা হয়েছে ৮টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত ও দুটি গুলি।

৬টা ৩৩ মিনিট ০৫ সেকেন্ডে খুনিরা কিলিং মিশন শেষ করে মোটরসাইকেলে চেপে বসে। তবে মোটরসাইকেলটি চালু হতে সময় নেয় ১৯ সেকেন্ড। ৬টা ৩৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডে তিন খুনি মোটর সাইকেলে চড়ে পালিয়ে যায়।

যে মোটর সাইকেল চালাচ্ছিল, তার মাথায় ছিল হেলমেট। বয়স আনুমানিক ৩০ থেকে ৩৫। তার পেছনে দুজন বসা ‍দুজনের মধ্যে মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছিল ছুরি। আর পেছনে বসা তৃতীয়জনের হাতে ছিল পিস্তল। ধারণা করা হচ্ছে, এই তৃতীয়জনই ছিল আটক রবিন।

এর আগে গত ৭ জুন রাতে হাটহাজারী উপজেলার পশ্চিম ফরহাদাবাদ থেকে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সাবেক শিবির নেতা আবু নছর গুন্নুকে (৪০) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এছাড়াও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে সন্দেহভাজন কালো রঙের মাইক্রোবাস উদ্ধার করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে মাইক্রোবাসের চালককেও।

গত ৫ জুন সকাল ৭টার দিকে নগরীর জিইসি মোড়ে প্রকাশ্যে গুলি করে পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতুকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ছেলেকে নিয়ে ক্যান্টনমেন্ট স্কুলে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। অতি সম্প্রতি বাবুল আক্তারের পদোন্নতির পর ঢাকায় অবস্থান করলেও তার স্ত্রী ছেলে-মেয়েকে নিয়ে নগরীর জিইসি এলাকার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন।