banner

শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

বিজিবিতে প্রথমবার নিয়োগ পাচ্ছে ৯৭ নারী

বিজিবিতে প্রথমবারের মতো ৯৭ নারী নিয়োগ পেতে যাচ্ছে। আগামী ৫ জুন চট্টগ্রাম সাতকানিয়ায় পাসিং আউট শেষে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (২ জুন) দুপুরে বিজিবি সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘যোগদানের পরপরই তাদের টেকনাফ ও বেনাপোলের মতো যেসব এলাকায় নারী পাচারকারীদের আনাগোনা সেখানে তাদের পোস্টিং দেয়া হবে।’ এছাড়াও বিজিবির গেটগুলোতেও নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে নারীরা। আগামী জুলাই মাসে আরো ১০০ জন নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

বিগত বছরে বিজিবির সফলতা তুলে ধরে মহাপরিচালক বলেন, ‘২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর খেলাধুলা বিজিবির সদস্যদের একটু ছন্দপতন হয়েছিল। তবে এখন বিজিবি খুব ভালো খেলছে। এবছর মোট আটটি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে পাঁচটিতে চ্যাম্পিয়ন ও তিনটিতে রানার্সআপ হয়েছে।’

 

মাগুরায় পায়ে শিকল বেঁধে গৃহবধূকে নির্যাতন, শাশুড়ি আটক

মাগুরা সদর উপজেলার বরই গ্রামে মাহফুজা খাতুন নামে এক গৃহবধূকে বারান্দার খুঁটির সঙ্গে পায়ে শিকল বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।

বুধবার বিকেলে পুলিশ উপজেলার বরই পশ্চিম গ্রামের গৃহবধূ মাহফুজা খাতুনকে উদ্ধার করেছে। তিনি গ্রামের শুকুর শেখের স্ত্রী। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে তার শাশুড়ি কমলা বেগমকে।

নির্যাতনের শিকার মাহফুজা সাংবাদিকদের জানান, মা-বাপ মরা তার ভাইয়ের ছেলে হিরণ (১৮) অনেকদিন ধরে তার কাছে এনে রেখেছিলেন। এক পর্যায়ের ভাতিজার সঙ্গে ভাসুর মন্টু মিয়ার মেয়ে সোনিয়ার প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে স্বামী শুকুর মিয়া ও ভাসুর মন্টু মিয়াসহ পরিবারের সবাই ঘটনার জন্য তাকে দায়ী করেন। এজন্য তাকে নানাভাবে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালিয়ে আসছিল।

এক পর্যায়ে বুধবার সকাল ১০টার দিকে স্বামী শুকুর, ভাসুর মন্টু, দেবর নান্নু, অতিয়ার, জহির ও শাশুড়ি কমলা তার পায়ে শেকল বেঁধে ঘরের খুঁটির সঙ্গে তালা মেরে দেয়। এরপর বেদম মারপিট শুরু করে।

আটককৃত মাহফুজার শাশুড়ি কমলা জানান, মাহফুজা আত্মহত্যার হুমকি দেওয়ায় তাকে বেঁধে রাখা হয়েছিল।

সদর থানার ওসি আজমল হুদা বলেন, বরই গ্রামে এ নারীকে নির্যাতনের পর খুঁটির সঙ্গে শিকল-তালা তিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে সাংবাদিকদের কাছ থেকে এমন খবর পেয়ে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে স্বামী, ভাসুর, দেবররা পালিয়ে গেলেও পুলিশ ওই নারীর শাশুড়ি কমলা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে।

এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওসি।

 

পরীক্ষা’য় ফেল, নববধূকে ত্যাগ

সতীত্বের পরীক্ষা’য় ফেল করায় পঞ্চায়েতের নির্দেশে বিয়ের মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই নববধূকে ত্যাগ করেছেন এক যুবক। মধ্যযুগীয় এ ঘটনা সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাসিক জেলায় ঘটেছে।

জানা গেছে, গত মাসের ২২ মে বিয়ে করেছিলেন নাসিক জেলার ওই যুবক। এর পরেই স্থানীয় খাপ গ্রাম পঞ্চায়েত ওই যুবককে তার স্ত্রীর সতীত্ব পরীক্ষা নেওয়ার উপদেশ দেয়। পঞ্চায়েতের নির্দেশে যুবক ফুলশয্যার রাতে মধ্যযুগীয় কায়দায় তাঁর স্ত্রীর সতীত্বের পরীক্ষা নেন। এর পর পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিয়ের আগেই নববধূ সতীত্ব হারিয়েছেন। তাই নববধূকে ছেড়ে দিতে হবে। পঞ্চায়েতের এই পরামর্শেই বিয়ের মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ওই যুবক তাঁর স্ত্রীকে ত্যাগ করেন।

এ ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকার সমাজসেবী রঞ্জনা গাভান্দে জানিয়েছেন, নববধূর পরিবারের কাছ থেকে জানা গেছে, বিয়ের আগে তিনি পুলিশে চাকরির চেষ্টা করেছিলেন। সেই চাকরির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য দৌড়, হাইজাম্প, লংজাম্প, সাইকেল চালানোসহ তাঁকে নানা রকমের শারীরিক কসরত করতে হয়েছিল। এ ছাড়া ওই নারী নিয়মিত খেলাধুলাও করতেন বলেও জানান তিনি। ফলে তাঁর সতীচ্ছেদ নষ্ট হয়ে যাওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ওই নারী সতীত্ব নিয়ে টানাটানি করা কিংবা তার চরিত্র সম্পর্কে অপবাদ দেওয়া কোনোভাবেই উচিত নয় বলে জানান রঞ্জনা গাভান্দে। এই একই ধরনের মত প্রকাশ করেছেন এলাকার অন্যান্য সমাজসেবীও। এ ঘটনায় ওই নারীর পরিবার পাত্রপক্ষ ও  স্থানীয় খাপ পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।

 

এক ‘রোহিঙ্গা প্রিন্সেসের’ মনোমুগ্ধকর কাহিনী

ইয়াঙ্গুন: মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়কে দেশটির ধারাবাহিক সরকারগুলো এতোটাই নিপীড়ন করেছে যে তাদের মধ্যে কোনো নেতৃত্বও বলতে গেলে তৈরি হয়নি। ফলে রোহিঙ্গারা মার খেলেও তাদের কোনো প্রতিবাদী কণ্ঠ দেখতে পাই না আমরা।
তবে আশার আলো দেখাচ্ছেন ওয়াই ওয়াই নু নামের এক সংগ্রামী তরুণী।

তিনি যখন তার নিপীড়িন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে কথা বলেন তখন তার মায়াবী মুখটি বদলে যায়, তার চোখ গাঢ় হয়ে আসে, তার দৃপ্তপৃষ্ঠ যেন উত্তেজনার বার্তা দেয়, তার কণ্ঠ বজ্রনিনাদী হয়ে ওঠে।

‘সরকার এখন অস্বীকার করে বসছে যে কোনোকালে আমাদের অস্তিত্ব ছিল,’ বলেন ওয়াই ওয়াই।
মিয়ানমারে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গার বাস। কয়েক শতাব্দী ধরে তারা দেশটিতে বাস করলেও তাদেরকে নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত রেখেছে সরকার। বহু রোহিঙ্গা জীবন বাঁচাতে দেশান্তরিত হয়েছেন কিংবা আশ্রয় নিয়েছেন আশ্রয় শিবিরে।

২৯ বছর বয়সী ওয়াই ওয়াই এখন নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের এক প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর।  পেশায় আইনজীবী এই নারী বিশ্বাস করেন যে তিনি মিয়ারমারের নতুন সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হবেন যে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা দরকার।
ওয়াই ওয়াই বলেন, এজন্য তিনি প্রয়োজনে সন্ন্যাসব্রতের জীবন বেছে নেবেন এই অর্থে যে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবন বিসর্জন দেবেন। তার লক্ষ্য বিশ্বের সবচেয়ে নিপীড়িত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ২ লাখ লোককে রাখাইনের পুলিশ পাহারার আশ্রয়শিবির থেকে মুক্ত করা।

জাতীয়তাবাদের বিষবাষ্প, অবিচার আর বৈষম্য এই তরুণীর জীবনেও ট্যাঙ্কের মত গড়িয়ে পড়েছে।  মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বিশ্বাস করতো যে একজন রোহিঙ্গা রাজনীতিকের কন্যার স্বাধীনতার অধিকার থাকতে পারে না।
এই অপরাধে তাকে ১৭ থেকে ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত রেঙ্গুনের একটি কারাগারে জীবন কাটাতে হয়েছে।

ওয়াই ওয়াইর বাবা দেশটির নির্বাচিত সাবেক সংসদ সদ্য কিয়াও মিনকে ৪৭ বছর কারাদণ্ড দিয়েছিল আদালত। ওয়াই ওয়াই তখন আইন বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। দুই মাস পরে তার মা, তার বোন এবং ভাইকেও ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
জেলের খাবার, কারাগারের পরিবেশ সবই আমি মেনে  নিয়েছিলাম কিন্তু আমি আর লেখাপড়া করতে পারব না, এটা মেনে নিতে পারছিলাম না,’ ডেইলি বিস্ট পত্রিকাকে বলছিলেন ওয়াই ওয়াই।

জেলে তার মত আরো রোহিঙ্গা তরুণী ছিল। তিনি তাদের সাথে কথা বলতেন। তাদের অনেকে হতাশায় ভেঙে পড়ে মাদকগ্রহণ ও পতিতাবৃত্তিতেও জড়িয়ে পড়ে। এসব দেখে ওয়াই ওয়াই সিদ্ধান্ত নেন তিনি নারী অধিকারকর্মী হবেন এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ব
আট বছর কারাবন্দি থাকার পর ওয়াই ওয়াই নু এবং তার উইমেন’ পিস নেটওয়ার্ক ‘ন্যায়বিচার’ এবং মানবাধিকার সম্পর্কে ৫০০ শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দেয়, যাদের বেশিরভাগই নারী।

কয়েক মাস আগে ওয়াই ওয়াই এবং তার বাবা রোহিঙ্গাদের একটি উদ্বাস্তু শিবিরে যান। তারা দেখেন সেখানকার তরুণ তরুণীরা হতাশায় ভেঙে পড়েছেন।
তিনি তাদের আশার বাণী শোনান যে শিগগিরই তাদের জীবনে স্বাধীনতা আসবে।

এখন ওয়াই ওয়াই নুকে তার অনেক ফেসবুক ফ্রেন্ড ‘রোহিঙ্গা প্রিন্সেস’ বলে ডেকে থাকেন। তবে এ উপাধি তার পছন্দ নয়। তিনি মাঠের সৈনিক হিসেবেই কাজ করতে চান।
আমি প্রিন্সেস নই। আমি জানি না এখনই কীভাবে এসব সংখ্যালঘুকে মুক্ত করতে হবে। কিন্তু আমি একটি জিনিস জানি যে আমার স্বপ্ন আছে। আমি ভালো মানুষ হতে চাই এবং এসব লোকদের জীবনে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা চাই।’

আট বছরের কারাবন্দি জীবনে ওয়াই ওয়াইর অনুপ্রেরণা ছিলেন দুজন মানুষ। একজন মিয়ানমারের নোবেলজয়ী গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সুচি, যিনি সে সময় গৃহবন্দি ছিলেন এবং অন্যজন আমেরিকান রাজনীতিক এবং তৎকালীন সিনেটর বারাক ওবামা (বর্তমানে প্রেসিডেন্ট)।
আমার মনে হয়েছে ওবামা নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি শুধু যুক্তরাষ্ট্রকেই বদলে দেবেন না, তিনি পুরো বিশ্বকেই বদলে দেবেন।

গত বছর ওই তরুণীকে হোয়াইট হাউজের নৈশভোজে দাওয়াত দেন ওবামা। সে সময় তিনি মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার সুযোগ পান।
সেই নৈশভোজের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ওয়াই ওয়াইর মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যায়।

‘আমি ছিলাম টেবিলে একমাত্র বিদেশি। বাকি আটজন ছিল আমেরিকান। মজার ব্যাপার হলো সেখানে যখন আমার নিজের পরিচয় দেয়ার সময় এলো তখন আমাকে কিছু বলতে হলো না। প্রেসিডেন্টই আমার সম্পর্কে সব কথা বলে দিলেন। কিন্তু আমি সম্ভবত প্রেসিডেন্টকে হতাশ করেছিলাম এই বলে যে মিয়ানমার সম্পর্কে তার নীতি কোনো সফলতার গল্প নয়। কারণ আমরা দেখছি মিয়ানমারজুড়েই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, বিশেষ করে রাখাইন রাজ্যে বর্বরতা চলছে।’
তরুণ তরুণীদের মনে আশার সঞ্চার করতে তিনি সপ্তাহে সাতদিনই খুব ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করেন।

তার প্রশিক্ষণ পাওয়া ১৮ বছরের এক তরুণী পায়ে সোন সু বলছিলেন, ‘ওয়াই ওয়াই নুর প্রশিক্ষণ ক্লাসে আসার পর থেকে আমার জীবনটা বদলে গেছে। তিনি আমার বোন, শিক্ষক এবং অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়েছেন।’
প্রেসিডেন্ট ওবামার দাওয়াত পেলেও এখনো তার আরেক রোল মডেলে সুচির পক্ষ থেকে দাওয়াত পাননি ওয়াই ওয়াই নু।

সুচি এখন মিয়ানমারের ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে।
ওয়াই ওয়াই নুর আশা সুচি সহসাই রোহিঙ্গাদের জন্য কিছু করবেন।

তার আশা তিনি সুচির সাথে সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন এবং তখন সুচিকে বলবেন, ‘তিনি দেশকে গণতন্ত্রে রূপান্তরের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা তখনই স্বার্থক হবে যখন এই প্রক্রিয়ায় সবাই অংশ  নেয়ার সুযোগ পাবেন।’