banner

শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

অপার সৌন্দর্যের থেগামুখ

‘নদীর এই বাঁকটা অনেক বেশি মোহময়’—নাদিয়ার মুখের কথা শেষ না হতেই দেখি চিকিৎসক নাজমুল হক নদীর বাঁকের ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। তারপর যতই সামনে এগিয়েছি, কর্ণফুলী নদীর প্রতিটা বাঁক আমাদের শুধুই মুগ্ধ করেছে, বিস্ময়ভরে তাকিয়ে দেখেছি। কখনো ছবি তোলার জন্য ব্যস্ত হয়েছি, আবার কখনো প্রকৃতি উপভোগ করে করে এগিয়েছি। পুরো দুই দিনের প্রায় ২৫ ঘণ্টা আমরা কর্ণফুলী নদীতে ভেসে বেড়িয়েছি। অসাধারণ ছিল সে নদীপথে চলার প্রতিটি মুহূর্ত।
ঠেগামুখ বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী শেষ গ্রাম। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন থেগামুখ। এখানে চাকমা ও মারমা নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস। থেগামুখের কথা জেনেছিলাম আগেই। সেই জানাটাকে উসকে দিয়েছিল বন্ধু সমীর মল্লিক। শুরু হলো পরিকল্পনা। বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ এল বাংলা নববর্ষের ছুটিতে। প্রথম আলোর রাঙামাটি প্রতিনিধি হরি কিশোর চাকমা ও বন্ধু গ্লোরি চাকমার সহযোগিতা নিলাম। নয়জনের দল নিয়ে আমরা রওনা হলাম। ১৩ এপ্রিল রাতে দেশ ট্র্যাভেলসের বাসে চললাম রাঙামাটির উদ্দেশে। নববর্ষের দিন রাঙামাটি থেকে পরদিন ভোরবেলা মিল্টন চাকমার ট্রলারে চেপে থেগামুখের উদ্দেশে সমতাঘাট থেকে শুরু হলো যাত্রা।
ঘণ্টা খানেক চলার পর পাহাড় ভেদ করে দাঁড়িয়ে থাকা বুদ্ধমূর্তি দেখে প্রথম যাত্রাবিরতি টানতে হলো। এভাবেই শুভলং, বরকল ও বাঙালটিলা হয়ে ঠিক সন্ধ্যায় আমরা ছোট হরিণা পৌঁছাই। সীমান্ত এলাকা, তাই নায়েক রহমতের পরামর্শে সেদিন আর সামনে না গিয়ে ছোট হরিণাতেই রাত কাটালাম আমরা।
পরের দিন ভোরের আলো তখনো ফোটেনি। অন্ধকার ভেদ করে আমরা যখন বের হলাম, সময় তখন ভোর চারটা হবে। ট্রলার চলা শুরু করতেই অনুভব করি স্বপ্নের মতো ঠান্ডা হাওয়া বইছে, চারিদিক ঝিরঝির। আমরা টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার গ্রাম ছোট হরিণা থেকে এগিয়ে চলি বড় হরিণার দিকে। বড় হরিণাতে আমাদের আবার যাত্রাবিরতি দিতে হয়। বড় হরিণা সীমান্তচৌকি বা বর্ডার আউটপোস্টে (বিওপি) আমাদের থেগামুখ যাত্রার বিষয়ে তথ্য জানানো ছিল। নাম লিখিয়ে বিজিবির দেওয়া হালকা চা-নাশতার আতিথেয়তা নিয়ে তবলাবাগ হয়ে ছুটে চলি থেগামুখের দিকে।
আবারও হুহু ঠান্ডা বাতাস আমাদের জড়িয়ে ধরল। আরাম পেয়েই কিনা সঙ্গী-সাথিরা ঘুমের অতলে তলিয়ে পড়ে। আমি না ঘুমিয়ে সারা রাতের ক্লান্তি সরিয়ে ট্রলারের ছাদে গিয়ে বসি। একটু পর দেখি আনিচ মুন্সি চলে এসেছেন। তারপর নওরিন এবং তারও পরে নাদিয়া চলে এল। এভাবে এক এক করে সবাই চলে আসে ট্রলারের ছাদে। এরই মধ্যে পুব আকাশে আলো দেখা দিয়েছে। তবে আকাশের গা থেকে পুরোপুরি অন্ধকার তখনো মুছে যায়নি। প্রচণ্ড গরমের দিনেও কেমন কুয়াশাভেজা প্রকৃতি। মধ্য এপ্রিলেও ঠান্ডা ঠান্ডা ভাব। সূর্যের আলোরা পাখা মেলতেই কর্ণফুলী নদী চকচক করে উঠল। পাখির ডাক ছিল আলো ফোটার আগে থেকেই, এবার শুরু হলো আমাদের কিচিরমিচির। দুপাশে পাহাড় আর সে পাহাড়ের ঘন জঙ্গলের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত কর্ণফুলী নদী দিয়ে বড় হরিণা পেছনে ফেলে ট্রলার এগিয়ে চলল আরও সামনে বাংলাদেশের শেষ এবং সীমানা গ্রাম থেগামুখের দিকে। এখানে আমাদের ট্রলার ও এলাকার অন্যান্য ট্রলারের সঙ্গে ভারতের পতাকাবাহী ট্রলার চলতে দেখে দারুণ রোমাঞ্চিত আমরা। এ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা, মনে মনে ভাবলাম সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক একেই বলে।
থেগামুখ বিওপির প্রবেশমুখটা টাইটানিক জাহাজের মতো। ধারণার চেয়ে আধা ঘণ্টা দেরিতে থেগামুখ পৌঁছানোয় থেগাদোরের আঞ্চলিক কমান্ডার তাঁর উৎকণ্ঠার কথা জানালেন। তারপর হালকা নাশতায় আপ্যায়িত করলেন। নাশতা সেরে এবার আমরা বের হই থেগা গ্রাম ঘুরে দেখতে, পাশেই সাজেকের দিকে বয়ে গেছে থেগা নদী।
থেগামুখ সম্পর্কে যেমন ভেবেছিলাম তার উল্টোই দেখলাম। দুর্গম এলাকা হলেও সীমান্তঘেরা থেগামুখ বা থেগাদোর গ্রাম ছিমছাম, বেশ সাজানো-গোছানো। এখানে ১০০ পরিবারের বসবাস। তার মানে সব মিলে এখানে ১০০টির মতো বাড়ি বা ঘর আছে। একটা চমৎকার বাজার আছে। এখানকার কারবারি বা গ্রামপ্রধানের নাম পুলিন চাকমা। একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তখন ক্লাস চলছিল। আমাদের দেখে ছাত্ররা বের হয়ে চোখে বিস্ময় নিয়ে তাকাল। তারপর আমাদের ক্যামেরায় পোজ দেওয়া শুরু করল। এখানে রেস্ট হাউস বা রাত্রি যাপনেরও ব্যবস্থা আছে। রেস্ট হাউস বলতে চাকমা বা মারমাদের ঘর। খাবার হোটেল আছে, খেতে চাইলে আগে থেকে ফরমাশ দিয়ে রাখতে হবে। রেস্ট হাউসে আশপাশের এলাকার লোকজন বা পাশের ভারতের মিজোরামের ডেমাক্রির অতিথি ছাড়া অন্য আর কারও থাকার সৌভাগ্য হয়নি, খাবার ব্যবস্থাও তাঁদের জন্যই জানালেন কারবারি পুলিন চাকমা। সপ্তাহের বুধ ও শুক্রবার এখানে হাট বসে। সেই দুই দিন এলাকা বেশ সরগরম থাকে। হাটে আসা ক্রেতার বেশির ভাগই ওপার মিজোরামের। ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরামে বাংলাদেশি পণ্যের ব্যাপক চাহিদা। স্কাই টিভির অ্যানটেনা প্রতিটি ঘরে ঘরে। আমরা পুরো গ্রাম ঘুরে থেগামুখ বাজারের বটগাছ তলায় বসে কারবারি পুলিন চাকমার আতিথেয়তা নিই। চা-বিস্কুট খাই, সঙ্গে মিজোরামের কোমল পানীয়। এভাবেই থেগামুখে ঘণ্টা দুয়েক কাটিয়ে লুসাই পর্বতমালা বা মিজোরামের নীল পাহাড়ের (ব্লু মাউনটেইন) জলধারার স্রোতের মিলনস্থল কর্ণফুলী নদীর উৎসমুখ দেখে আমরা ফিরতে থাকি। থেগামুখ তখন পেছনে।

.প্রয়োজনীয় তথ্য
রাঙামাটি থেকে ছোট হরিণা পর্যন্ত লঞ্চ চলাচল রয়েছে। ছোট হরিণা পর্যন্ত সাধারণের চলাচলের অনুমতি, তারপর আর নেই। বড় হরিণা হয়ে থেগামুখ যেতে হলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অনুমতি নিয়ে যেতে হবে। অনুমতির জন্য রাঙামাটির জিএসও (ইন্টেলিজেন্স) ৩০৫ পদাতিক ব্রিগেড বরাবর আবেদন করতে হবে। অনুমতি মিললে রাঙামাটি হয়ে সমতাঘাট বা রিজার্ভ বাজার থেকে ছোট হরিণা হয়ে থেগামুখ। যাত্রাকালে পর্যাপ্ত শুকনা খাবার ও পানি সঙ্গে রাখবেন। থেগামুখে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসতে হবে। এক কিংবা দুই রাত আপনাকে ছোট হরিণা থাকতে হবে। রাত্রি যাপনের জন্য ছোট হরিণার বিদ্যুৎ ও টয়লেটবিহীন রেস্ট হাউসের ছোট্ট ঘরই একমাত্র ভরসা। দু-তিনটা খাবারের হোটেল থাকলেও আগে থেকে ফরমাশ না দিলে খাবার পাবেন না।

 

বরফশীতল রূপচর্চা!

ফ্রিজের ভেতরেই যদি থাকতে পারতাম! গরমে এর চেয়ে আরাম আর কোথায় পাওয়া যাবে? গরমের সময় ঠান্ডা যেকোনো কিছুই ভালো লাগে। এ সময় জীবনযাপনে শীতল স্পর্শ এনে দেয় কিছুটা আরাম। রূপচর্চাতেও নিয়ে আসতে পারেন এই শীতলতা। বরফের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন ত্বকের লাবণ্য। জানালেন আয়ুর্বেদ রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।
বিভিন্ন ফলের রস অথবা অন্য কোনো উপাদান দিয়ে বরফের কিউব বানিয়ে সেটা রূপচর্চায় ব্যবহার করা যায়। বিষয়টি সহজ, সময়ও বাঁচায়। কিশোরী বয়স থেকে যেকোনো ত্বকের অধিকারী বরফ কিউবের মাধ্যমে রূপচর্চা করতে পারবেন। যাঁরা মাথা ব্যথায় ভোগেন সাইনাস কিংবা মাইগ্রেনের কারণে, তাঁদের বেলায় শুধু নিষেধাজ্ঞা। বাইরে রোদ থেকে এসে ব্যবহার করা যাবে। আইস কিউব ব্যবহারে মেকআপ অনেকক্ষণ স্থায়ী হয়।
বিভিন্ন ধরনের আইস কিউব
* কাঁচা দুধ ও মধু মিশিয়ে বানানো আইস কিউব রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং বলিরেখা ও ত্বকের দাগ কমাতে সাহায্য করে। ভালো ফলের জন্য রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আইস কিউবটি পুরো মুখে মেখে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন। এটা ত্বক ময়েশ্চারাইজার করবে, দূষণ ও সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মি থেকে ত্বকের পোড়া ভাব কমাবে। তবে তৈলাক্ত ত্বকে এই কিউবটি ব্যবহার করা যাবে না। এই শুষ্ক ত্বকের জন্য উপযোগী।

* ব্রণ ও রোদে পোড়া দাগের জন্য ব্যবহার করুন গ্রিন টি দিয়ে তৈরি আইস কিউব।
* তরমুজের রস ও পুদিনা পাতা আইস কিউব ব্যবহারে ত্বক কোমল করে এবং ত্বকের ক্লান্তি ভাব দূর করে। এই গরমের জন্য খুবই উপকারী।
.* লেবুর রস, মধু ও পুদিনা পাতা রস দিয়েও তৈরি করা যায় আইস কিউব। এই আইস কিউব সূর্যের পোড়া ভাবের জন্য খুবই উপকার। এটি তৈলাক্ত ত্বক এবং সেনসিটিভ ত্বকের জন্য দারুণভাবে কাজ করে।
* শসার রসের আইস কিউব আপনার ত্বকে আনবে সজীবতা।
* নিমপাতা ও হলুদ জ্বাল দিতে হবে। ঠান্ডা করে সেই পানি আইস কিউব বাক্সে ঢেলে এবার ডিপফ্রিজে জমিয়ে নিন। এই আইস কিউব অসাধারণভাবে কাজ করে ব্রণ ও ব্ল্যাক হেডস দূর করতে। এটি যেকোনো ত্বকের অ্যালাজি এবং জ্বালা পোড়ার জন্যও কাজ করবে।
* বাঙ্গির রস দিয়েও বানিয়ে নিতে পারেন আইস কিউব। এটা শুষ্ক ও মিশ্র ত্বকের জন্য উপকারী।
* গোলাপ পানি ত্বকের জন্য উপকারী। এটা ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন বাইরে থেকে এসে গোলাপ পানির কিউব ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকে আনবে সতেজ ভাব। এটি সব রকম ত্বকের জন্যই উপযোগী।
আইস কিউব ব্যবহারের পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।
আপনি দিনের যে সময়েই আইস কিউব ব্যবহার করুন না কেন, মুখ ধোয়ার পর অবশ্যই ক্রিম লাগাতে হবে।

 

যা আগে কেউ করেনি, তেমন কাজ করতে ভালোবাসি

এবিসি রেডিও ৮৯.২ এফএমে প্রতি সোমবার রাত ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত প্রচারিত হয় ‘কুয়াশা’। তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজ এই অনুষ্ঠানটির বিশেষ পর্ব প্রচারিত হবে। অনুষ্ঠানটির প্রযোজক ও উপস্থাপক কথাবন্ধু শারমিন। মূল পরিকল্পনাও তাঁর। অনুষ্ঠানটি নিয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে।
রেডিওতে এমন একটি অনুষ্ঠান করার পরিকল্পনা কীভাবে মাথায় এল?
ছোটবেলা থেকেই ভৌতিক ও রোমাঞ্চধর্মী গল্প আমার খুব ভালো লাগত। শৈশবে গোয়েন্দা হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। শার্লক হোমস, ব্যোমকেশ বক্সী আমার প্রিয় কয়েকটি চরিত্র। সেভাবেই আসলে ‘কুয়াশা’র মতো একটি রেডিও অনুষ্ঠান করার ভাবনা মাথায় আসে। তা ছাড়া আমি বরাবরই নতুন কিছু করার চেষ্টা করি। যা আগে কেউ করেনি, যা অন্যদের নতুন করে ভাবায়, তেমন কাজ করতে ভালোবাসি।
এই অনুষ্ঠান নিয়ে সামনের পরিকল্পনা কী?
প্রথম দিকে সত্যি ঘটনা ও বিখ্যাত লেখকদের গল্প নিয়ে অনুষ্ঠানটা সাজিয়েছিলাম। এরপর এখানে মৌলিক গল্প যুক্ত করি। আমাদের অনুষ্ঠানে চিত্রনাট্যকারের একটি দল আছে। আবার শ্রোতারাও গল্প লিখে পাঠান। গত বছর শ্রোতাদের লেখা গল্প নিয়ে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলাম আমরা। অনেক বিখ্যাত রোমাঞ্চধর্মী গল্প নিয়েও রেডিও নাটক তৈরি করেছি। এভাবেই অনুষ্ঠানটিতে নিত্যনতুন বিষয় যুক্ত করছি এবং করব।
‘কুয়াশা’ নামে তো আপনার সম্পাদিত দুটি বইও বের হয়েছে।
হ্যাঁ, ‘কুয়াশা’তে প্রচারিত গল্প নিয়েই এই দুটি সংকলন। প্রথম বইটি বের হয় গত বছর অমর একুশে বইমেলায়। কুয়াশা-২ বাজারে আসে এ বছরের বইমেলায়। একদিন না একদিন তো ‘কুয়াশা’ অনুষ্ঠানটা শেষ হবেই, কিন্তু এই বইগুলো পাঠকদের সংগ্রহে থেকে যাবে সব সময়।
এই অনুষ্ঠানটি করতে গিয়ে মজার কোনো অভিজ্ঞতার কথা মনে পড়ে?
অনুষ্ঠানে যখন ভৌতিক গল্পগুলো বর্ণনা করা হয়, তখন রহস্যজনক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নেপথ্যে সে রকম সুর বাজানো হয়। একবার অনুষ্ঠান চলাকালীন কী যেন একটা পড়ে ‘টুং’ করে শব্দ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি ভয় পেয়ে স্টুডিও থেকে ছুটে বের হয়ে গিয়েছিলাম!
সাক্ষাৎকার: নাদিয়া মাহমুদ

 

অশুভ শক্তি দমনে চলচ্চিত্র হতে পারে অন্যতম মাধ্যম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সমাজে অশুভ শক্তি দমনে চলচ্চিত্র হতে পারে অন্যতম মাধ্যম। দর্শকেরা ছবি দেখে যাতে কিছু শিখতে পারে, সে দিকটিতে খেয়াল রাখতে তিনি নির্মাতাদের অনুরোধ করেন।

গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ২০১৪ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ২৬টি বিভাগে ২৯ জন শিল্পী ও কলাকুশলীর হাতে পুরস্কার হিসেবে পদক ও অর্থের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।

২০১৪ সালের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা ও অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন ফেরদৌস আহমেদ এবং মৌসুমী ও বিদ্যা সিনহা মীম। আর আজীবন সম্মাননা লাভ করেছেন অভিনেতা সৈয়দ হাসান ইমাম এবং অভিনেত্রী রানী সরকার।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যবসা পরিবর্তনের স্বার্থে অনেক হলের মালিক তাঁদের সিনেমা হল ভেঙে ফেলছেন। অথচ এটিকে আরও আধুনিক করলে ব্যবসা ও সুস্থ সামাজিক বিনোদনের সুযোগ তৈরি করা যায়, যা সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশও বটে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মানের চলচ্চিত্র নির্মাণের মেধা, মনন ও শক্তি আমাদের দেশের শিল্পী ও কলাকুশলীদের আছে।’ তিনি চলচ্চিত্রের কলাকুশলীদের এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

২০১৪ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পীদের নাম ঘোষণা করা হয় এ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি। পুরস্কার বিতরণের জমকালো আসরটি বসে গতকাল বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।

আজীবন সম্মাননা পাওয়া দুই অভিনয়শিল্পী সৈয়দ হাসান ইমাম ও অভিনেত্রী রানী সরকারকে দেড় লাখ করে, শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও শ্রেষ্ঠ পরিচালককে ১ লাখ টাকা করে এবং অন্যদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকার চেক দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রত্যেককে ১৮ ক্যারেট ১৫ গ্রাম ওজনের স্বর্ণপদক দেওয়া হয়।

শ্রেষ্ঠ অভিনেতার (প্রধান চরিত্র) পুরস্কার পান এক কাপ চা চলচ্চিত্রের জন্য ফেরদৌস আহমেদ। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার পান যৌথভাবে মৌসুমী ও বিদ্যা সিনহা মীম।

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এ কে এম রহমতউল্লাহ ও তথ্যসচিব মরতুজা আহমেদ।

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ-এর প্রযোজক হিসেবে এবং এই চলচ্চিত্রের গীতিকার হিসেবে দুটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন মাসুদ পথিক। মেঘমল্লার চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালক হয়েছেন জাহিদুর রহমান অঞ্জন। শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে গাড়িওয়ালা। শ্রেষ্ঠ গায়ক হয়েছেন মাহফুজ আনাম জেমস এবং শ্রেষ্ঠ গায়িকা যৌথভাবে রুনা লায়লা ও মমতাজ।

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (পার্শ্ব চরিত্র) শাহ মো. এজাজুল ইসলাম, শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (পার্শ্বচরিত্র) চিত্রলেখা গুহ, শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (খল চরিত্র) তারিক আনাম খান, শ্রেষ্ঠ কৌতুক অভিনেতা মিশা সওদাগর, শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক সাইম রানা, শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী আবির হোসাইন এবং শিশুশিল্পী হিসেবে বিশেষ পুরস্কার মারজান হোসাইন জারা। শ্রেষ্ঠ সুরকারের পুরস্কার পান বেলাল খান। শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার মরহুম আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের পক্ষে পুরস্কার গ্রহণ করেন তাঁর ভাই নুরুজ্জামান ইলিয়াস। শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার সৈকত নাসির, শ্রেষ্ঠ সংলাপ জাহিদুর রহমান অঞ্জন, শ্রেষ্ঠ সম্পাদক তৌফিক হোসেন চৌধুরী, শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক মারুফ সামুরাই, শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক মোহাম্মদ হোসেন, শ্রেষ্ঠ শব্দ গ্রাহক রতন পাল, শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জাকার কনকচাঁপা চাকমা এবং শ্রেষ্ঠ মেকআপ ম্যানের পুরস্কার পান আবদুর রহমান।

 

গরমে ত্বকের ৫ সমস্যা

গরম, রোদ আর ঘামের কারণে ত্বকের নানা ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই এ সময় ত্বকের বাড়তি যত্ন প্রয়োজন। জেনে নিন ত্বকের গ্রীষ্মকালীন কয়েকটি সমস্যা ও প্রতিকার:
ঘামাচি: ঘামাচি বা হিট র্যা শ প্রায় সবার হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম, ঘাম ও আবদ্ধ জামাকাপড় এ সমস্যার জন্য দায়ী। ঘাড়, কুঁচকি, পিঠ, বগল ও বুকে ঘামাচি বেশি হয়। এটি প্রতিরোধের জন্য অতিরিক্ত গরম পরিবেশ এড়িয়ে চলুন, ঢিলেঢালা সুতি পোশাক পরুন, নিয়মিত গোসল করুন। ঘামাচির সমস্যায় ক্যালামিন লোশন ব্যবহার করা যায়, পুঁজ হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
ছত্রাক সংক্রমণ: গরমে ঘামে ভিজে ত্বকে ছত্রাক সংক্রমণ বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ঘাম হলে মুছে ফেলতে হবে। পোশাকও পাল্টানো উচিত। আক্রান্ত স্থানে পানি ও সাবান ব্যবহার কমিয়ে দিতে হবে। ছত্রাকনাশক ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
ব্রণ: গরমে প্রদাহসহ ব্রণের প্রবণতাও বাড়ে। ভালো করে বারবার মুখ ধুতে হবে যেন তেল-ময়লা জমে না থাকে। প্রসাধনীর ব্যবহার কমিয়ে ফেলুন। বাইরে থেকে এলে মুখমণ্ডলে ঠান্ডা পানির ঝাপটা বা বরফ ঘষে নিতে পারেন।
সানবার্ন: প্রখর রোদে ত্বক লাল হয়ে একটু ফুলে যেতে পারে ও ব্যথাও হতে পারে। ফরসা ত্বকে ও শিশুদেরই বেশি সানবার্ন হয়। তীব্র গরমে বাইরে থাকার দু-তিন ঘণ্টা পর থেকে শুরু হয়ে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে এ সমস্যা। পাশাপাশি জ্বর, ফোসকা বা বমির ভাবও হতে পারে। রোদে মুখ লাল হয়ে গেলে অতিসত্বর ঠান্ডা পানির ঝাপটা নিন। প্রচুর পানি পান করুন। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
অ্যালার্জি: বিভিন্ন প্রসাধনসামগ্রীর রাসায়নিক পদার্থ সূর্যালোকের উপস্থিতিতে বিক্রিয়া করে অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া করে। এতে ত্বকের প্রদাহ বা একজিমা দেখা দেয়। এ সময় প্রসাধনী ও সানব্লক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি।
চর্ম বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল

 

কর্মজীবী নারীদের ইমোজি

সমাজের সবক্ষেত্র, সব ধরনের কাজ এখন নারীর বিচরণক্ষেত্র। স্বাস্থ্যসেবা, বিজ্ঞান কিংবা ব্যবসায়ের নানা ক্ষেত্রে নারীর এমনই কিছু প্রতিকৃতি ইমোজির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন গুগলের একদল প্রকৌশলী। নারীদের শক্তি এবং পৃথিবীতে তাঁদের অবদান সম্পর্কে জানানোই এর উদ্দেশ্য। কিন্তু এত কিছু থাকতে ইমোজি কেন বেছে নিলেন তাঁরা? ১৬ থেকে ২৪ বছরের নারীদের ৮২ শতাংশ ইন্টারনেট যোগাযোগে ইমোজি ব্যবহার করে থাকেন। বিশেষ করে এই তরুণীদের জন্যই এই ইমোজিগুলো।
গুগল প্রকৌশলীদের তৈরি ১৩টি ইমোজি সম্প্রতি ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামে উপস্থাপন করা হয়। এই কনসোর্টিয়াম ঠিক করে কোন কোন ইমোজি ওয়েবসাইটে লেখার সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে।
স্মার্টফোন এবং ওয়েবসাইটে ইদানীং ইমোজির ব্যবহার বেড়েই চলেছে। একটি ছবিতে একসঙ্গে অনেক কথা বলা হয়ে যায়। জাপানি ই (ছবি) এবং মোজি (অক্ষর) শব্দ দুটির সমন্বয়ে তৈরি ‘ইমোজি’ ২০১৩ সালে দ্য অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারিতে যুক্ত করা হয়েছে। ১১ মার্চ মার্কিন সংবাদপত্র দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এর সম্পাদকীয় পাতায় ওহিও ওয়েজলিয়ান ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অ্যামি বুচারের ‘ইমোজি ফেমিনিজম’ শিরোনামে লেখা বিশেষজ্ঞ মতামত এই গুগল কর্মীদের অনুপ্রেরণার উৎস বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
গুগলের নকশায় প্রযুক্তি, নির্মাণশিল্প, কৃষি এবং খাদ্য তৈরিতে নারী প্রতিকৃতি তুলে ধরা হয়েছে। চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি প্রয়াত ইংরেজ গায়ক, গীতিকার, অভিনেতা ও প্রযোজক ডেভিড বাওয়ির স্মরণে নারী সংগীতজ্ঞ ইমোজি বানানো হয়েছে।
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের অনুমোদনক্রমে নতুন ইমোজি প্রকাশ করা হবে বলে জানা গেছে। গুগল প্রকৌশলীদের তৈরি এই ইমোজিগুলো তাতে স্থান পাবে কি না, তা এখনই জানার উপায় নেই।
সূত্র: বিবিসি