banner

শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

ইসলামের দৃষ্টিতে দাম্পত্য জীবন

স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকবে এটি ইসলামী পারিবারিক জীবনের কাম্য বিষয়। স্বামী কিংবা স্ত্রী কারও অবিশ্বস্ততাকে ইসলাম অনুমোদন করে না। কোনো স্বামী-স্ত্রীর বদলে অন্য কোনো নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তুললে তা ইসলামী অনুশাসনে মারাত্মক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। একইভাবে কোনো স্ত্রী পর পুরুষের সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুললে সেটিও একই ধরনের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। রোজ কেয়ামতেও ব্যভিচারের অপরাধে জড়িত পুরুষ বা নারীর স্থান হবে জাহান্নাম।ইসলাম স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক সদাচরণের ওপর গুরুত্ব দেয়। স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর অসদাচরণের জন্য তাকে যেমন রোজ কেয়ামতে জবাবদিহি করতে হবে, তেমন কোনো নারী স্বামীর সঙ্গে অসদাচরণ করলে তাকেও জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম যে বিরোধ মীমাংসা করা হবে তা হলো- এক স্বামী ও তার স্ত্রীর বিরোধ। আল্লাহর শপথ! (সে সময়) স্ত্রীর জিহ্বা কথা বলবে না, বরং তার হাত-পা সাক্ষ্য দেবে, পৃথিবীতে সে তার স্বামীর সঙ্গে এই এই আচরণ করেছে। আর স্বামীর হাত-পাও সাক্ষ্য দেবে, সে তার স্ত্রীর সঙ্গে এই এই ভালো আচরণ বা এই এই খারাপ আচরণ করেছে। অতঃপর আল্লাহর এজলাসে মনিব ও কর্মচারী সংক্রান্ত মামলা উঠবে। সেদিন কোনো আর্থিক জরিমানা করে বিরোধ মিটানো হবে না। বরং মজলুমকে জালিমের নেক আমলগুলো দিয়ে দেওয়া হবে এবং মজলুমের বদ আমলসমূহ জালিমের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হবে। অবশেষে প্রতাপশালী অহংকারী অত্যাচারীদের লোহার জিঞ্জিরে পেঁচিয়ে হাজির করা হবে। অনন্তর বলা হবে তাদের ধাবমান করে জাহান্নামে নিয়ে যাও।’ -তাবরানি।ইসলামের দৃষ্টিতে সেই ব্যক্তিই উত্তম, যে তার স্ত্রীর দৃষ্টিতে উত্তম। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি উত্তম হিসেবে বিবেচিত হবে কিনা তা তার স্ত্রীর সার্টিফিকেটের ওপর নির্ভর করবে। মানুষ যাতে স্ত্রীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকে তার আস্থা অর্জনের চেষ্টা করে পারস্পরিক ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হয় তা উৎসাহিত করতে স্বামীর উত্তম হিসেবে বিবেচিত হওয়ার বিষয়টি স্ত্রীর বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ইসলামের এ বিধান পারিবারিক জীবনে স্ত্রীর মর্যাদাকে মহিমান্বিত করেছে।আল্লাহ ও রাসুলুল্লাহ সাল্লিল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লাম এর নির্দেশনা অনুযায়ী চললে পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব।

 

কেমন হওয়া উচিত একজন নারীশ্রমিকের কর্মক্ষেত্র?

নারীবান্ধব পরিবেশ হওয়ার কারণে কর্মক্ষমতাও বেড়ে যাবে বহুগুণ, ফলে রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে । পাশাপাশি সমাজ থেকে ইভটিজিং, এসিড ও ধর্ষণের মত অপরাধ অনেক কমে আসবে । নারী পুরুষ আলাদা কর্মক্ষেত্রে থাকায় অনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ কমে আসাবে ফলে পারিবারিক বন্ধন আরো দৃঢ় হবে । সর্বোপরি আল্লাহব হুকুম ফরজ পর্দা পালন করার মাধ্যমে ইহ ও পারলৌকিক সমৃদ্ধিতে বলিয়ান হবেন নারী শ্রমীক ।

বাংলাদেশের শিল্প কারখানায় নানা পেশায় ক্রমশ জড়িয়ে পরছে নারী শ্রমিক, পোশাক শিল্পের সাথে জরিত শ্রমিকের মধ্যে প্রায় ৭৫/৮০ ভাগ নারীশ্রমিক । যে নারী বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা টেনে নিয়ে যাচ্ছে তার জন্য প্রথম প্রয়োজন নিরাপদ ও কর্মবান্ধব পরিবেশ , প্রয়োজন আলাদা কর্মক্ষেত্রের। যা তার জন্য পর্দার ফরজ হুকুম যথাযথ পালনের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি করবে। পুরুষ নিয়ন্ত্রিত এই সব কর্মক্ষেত্রে নারিশ্রমিক প্রায়ই নিগৃহীত হচ্ছেন নানাভাবে । বৈতনিক অসমতা থেকে শুরু করে পুরুষ শ্রমিক দ্বারা মৌখিক ও শারিরিকভাবেও লাঞ্চিত হতে হচ্ছে অহরহ । পুরুষ শ্রমিকদের সাথে একই প্লাটফর্মে কাজ করার কারণে মানসিক চাপে ভোগেন অধিকাংশ নারীশ্রমিক । নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশার সুযোগ থাকার কারণে শ্রমিকরা প্রায়শই জড়িয়ে যাচ্ছেন অনৈতিক সম্পর্কে। এতে সমাজের পারিবারিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে । অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে অনেকের ভবিষ্যৎ । অনেক সন্তান বাবা-মা হারিয়ে আর্তের মত জীবন যাপন করছে । ফলে সমাজে ইভটিজিং, এসিড, ধর্ষণের মত অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। চলমান এ অবস্থার পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি । প্রয়োজন নারীশ্রমিকের জন্য নারী-বান্ধব আলাদা কর্মক্ষেত্র।

নারীশ্রমিকের জন্য কর্মবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে যা করা প্রয়োজন : ১. নারী শ্রমিকদের জন্য আলাদা শেডের ব্যাবস্থা করা। ২. মহিলা শ্রমিকদের জন্য মহিলা সুপারভাইজার, ইনচার্জ, ম্যানেজারের ব্যাবস্থা করা । ৩. উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যাবস্থা করা ও ভারী কাজ থেকে বিরত রাখা । ৪. উপযুক্ত আবাসন ও প্রয়োজনীয় পরিবহনের ব্যাবস্থা । ৫. মহিলা চিকিৎসকের মাধ্যমে নিয়মীত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা । ৬. অসুস্থতাকালীন সময়ে কাজের চাপ কমিয়ে দেয়া । ৭. হাতের নাগালে পর্যাপ্ত খাবার পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের ব্যাবস্থা রাখা । ৮. পরিচ্ছন্ন খাবার ঘর ও নামাজ ঘরের ব্যাবস্থা রাখা । ৯. বিনোদন, সাপ্তাহিক তালিম , কোরআন ও প্রয়োজনীয় মাস’আলা মাসায়েল শিক্ষার ব্যাবস্থা করা । ১০. প্রসূতিকালীন ছুটি, বেতন ভাতা প্রদান ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রদান । ১১. বাচ্চা লালন-পালনের জন্য অভিজ্ঞ বেবি সিটারের ব্যাবস্থা করা । ১২. দুগ্ধদাতা মায়ের জন্য উপযুক্ত ব্যাবস্থা প্রদান । ১৩. সার্বিক নিরাপত্তা বিধান ও উপযুক্ত পারিশ্রমিক প্রদান । ১৪. নারী কন্যা, জায়া, জননি। শিক্ষিত নারী যেমন শিক্ষিত জাতি উপহার দেয় তেমনি বর্তমানে রাষ্ট্রের অর্থনীতির বোঝাও টেনে চলেছে একজন নারীই । নারীর জন্য যদি নারীবান্ধব আলাদা কর্মক্ষেত্র দেয়া সম্ভব হয় তবে নারীর আংশগ্রহণ আরো বাড়বে । নারীবান্ধব পরিবেশ হওয়ার কারণে কর্মক্ষমতাও বেড়ে যাবে বহুগুণ, ফলে রাষ্ট্রের অর্থনীতির চাকা আরো সচল হবে । পাশাপাশি সমাজ থেকে ইভটিজিং, এসিড ও ধর্ষণের মত অপরাধ অনেক কমে আসবে । নারী পুরুষ আলাদা কর্মক্ষেত্রে থাকায় অনৈতিক সম্পর্কের সুযোগ কমে আসাবে ফলে পারিবারিক বন্ধন আরো দৃঢ় হবে । সর্বোপরি আল্লাহব হুকুম ফরজ পর্দা পালন করার মাধ্যমে ইহ ও পারলৌকিক সমৃদ্ধিতে বলিয়ান হবেন নারী শ্রমীক ।

 

সুতি পোশাক যে কারণে সেরা

প্রচন্ড গরম এখন চারিদিক। তাপমাত্রার বাড়তি চাপে জীবন যখন অতিষ্ঠ। তা বলে বাড়িতে বসে থাকা যায় না। স্কুল, কলেজ, অফিস, জরুরি কোনও কাজে বাইরে যেতেই হয়। গরমকালে রোদের তাপ এড়াতে প্রয়োজন সঠিক পোশাকের। এমন জামাকাপড় বেছে নিতে হবে, যা বেশ আরামদায়ক। এই সময়ে সুতির জামাকাপড়ই সবচেয়ে ভালো।

১. গরমে শরীরে প্রচণ্ড পরিমাণ ঘাম হয়। এর হাত থেকে বাঁচতে সাহায্য করবে সুতির পোশাক।

২. সুতির জামাকাপড়ে হাওয়া চলাচল ভালো হয়। যা শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।শরীর ঠান্ডা রাখে।

৩. সুতির জামাকাপড় বেশ হালকা হয়। গরমকালে এমন হালকা পোশাক পরাই ভালো।

৪. সুতির জামাকাপড় সূর্যের তেজ শুষে নেয়। তাই গরম লাগার কোনও প্রশ্নই নেই।

৫. গরমকাল মানেই শরীরে ঘামাচি, অ্যালার্জি। জ্বালা যন্ত্রণায় ভুগতে হয়। এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে সুতির পোশাক ব্যবহার করা ভালো।

৬. কড়া রোদের হাত থেকে বাঁচতে বেছে নিতে হবে ফুলহাতা সুতির জামা। তাতে বেশি গরমও লাগবে না। হাতে ট্যান পড়ার ভয়ও থাকবে না।

 

উদ্বিগ্নতা যেভাবে নেতৃত্ব গুন বাড়ায়

অবাক হচ্ছেন? ভাবছেন উদ্বিগ্নতার মত নেতিবাচক একটি বিষয় কিভাবে নেতৃত্বের জন্য ইতিবাচক হতে পারে? মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, উদ্বিগ্নতাকে কাজে লাগানো সম্ভব। শুধু আপনাকে হতে হবে একটু কৌশলী। উদ্বিগ্নতা যখন মানসিক ব্যাধি, তখন অবশ্যই এর চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। কিন্তু একটি মাত্রা পর্যন্ত আপনি এর সুবিধা নিতে পারেন! কীভাবে সম্ভব, আসুন জেনে নিই তার কয়েকটি ধাপ।
কাজের গতি বাড়ায় উদ্বিগ্নতা
“আমার অনেক কাজ, অনেক কিছু করতে হবে, কখন করব?” “আমি কি অসুস্থ হয়ে পড়ছি?” “আমার কি পেট ব্যথা? এই ব্যথা কি বাড়বে? তাহলে কি বিছানায় পড়ে থাকব? তাহলে আমার কাজের কী হবে?” এই অতিরিক্ত দুঃশ্চিন্তা আপনার কাজের গতি বাড়ায়। যে কাজ আপনি করতে হয়ত অনেকটা সময় ব্যয় করতেন, সেই কাজ আপনি করে ফেলেন অনেক দ্রুত। কারণ আপনার উদ্বিগ্নতা আপনাকে ঘুমাতে দেয় না, অস্থির করে রাখে। কাজ শেষ করতে না পারার অনিশ্চয়তা আপনাকে অপেক্ষা করতে দেয় না, অলসতা করতে দেয় না। বরং বলে, “যা কাল হতে পারে, তা আজ কেন নয়?”
উদ্বিগ্নতার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলুন
আপনি অল্পতেই উদ্বিগ্ন হয়ে যান এই নিয়ে চিন্তিত না হয়ে বরং উদ্বিগ্নতার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। আপনার জীবন হয়তো আপনার কাছে খুবই কষ্টের, অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এই পর্যন্ত এসেছেন আপনি। এই নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগবেন না। বরং আপনার সংগ্রামের কথা সবাইকে বলুন। নিজের জীবন নিয়ে পর্যালোচনা করতে গিয়ে আপনি কিজেই দেখবেন, উগ্বিগ্নতা আপনাকে কীভাবে সহায়তা করেছে। আপনি যখনি হতাশ হয়েছেন, যখনই থেমে যেতে চেয়েছেন, আপনার ভেতর থেকে উদ্বিগ্নতা তৈরি হয়েছে। আপনার মনে হয়েছে, আপনাকে পারতেই হবে। এই তাড়না থেকেই আপনি এতদূর এসেছেন। এভাবেই নেতা হওয়ার গুণ তৈরি হয়েছে আপনার মধ্যে।
উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করুন
আপনি যে উদ্বিগ্ন তা আপনার কর্মীদের বুঝতে দিন। আপনার ভেতরের তাড়না তাদের মাঝে ছড়িয়ে দিন। আপনি হয়তো ভাবছেন, কাজ নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা তো একটা বদভ্যাস। না। এই চিন্তাই আপনার কাজের গতি কীভাবে বাড়িয়ে দেয় তা আমরা দেখেছি। তাই একে বরং কাজে লাগান। আপনিও আপনার কাজ সময়মত করুন, অন্যদেরকেও কাজে উৎসাহী করে তুলুন। যে অনিশ্চয়তা আপনি বোধ করছেন, সেই অনিশ্চয়তা অন্যদের মনেও ঢুকিয়ে দিন। বার বার বলুন, কালকের জন্য ফেলে রাখা যাবে না কোন কাজ। আপনার কাজের প্রতি দায়িত্বশীলতা দেখে তারাও দায়িত্বশীল হবে। আর এভাবেই আপনি এগিয়ে যেতে থাকবেন একজন যোগ্য নেতা হিসেবে।
মনোযোগের চর্চা করুন
উদ্বিগ্নতা যেন মনোযোগকে ধূলিস্যাত না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন। আপনি আপনার কাজ নিয়ে, আপনার প্রতিষ্ঠানের উন্নতি নিয়ে চিন্তিত। খুবই ভাল কথা। কিন্তু অধিক চিন্তা যেন নার্ভাসনেস তৈরি না করে। মনে রাখবেন, উগ্বিগ্নতা আপনার এমন একটি গুণ যার নিয়ন্ত্রণ হারানো বিপজ্জনক। একে সামলে রাখতে হবে। তাই মনোযোগ হারাবেন না কোনভাবেই। কাজের সফলতা শুধু চিন্তা দিয়ে আসবে না। তাই পাশাপাশি মনোযোগ ধরে রাখার অনুশীলন করুন। সিদ্ধান্তগুলো চিন্তা করে, সময় নিয়ে, আলোচনা করে তারপর নিন। একটি সঠিক সিদ্ধান্ত আপনাকে অনেক বড় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে সবার চোখে। তাই উদ্বিগ্নতা এবং মনোযোগকে পাশাপাশি বজায় রাখুন।
মনে রাখুন, আপনি ঠিক আছেন
আপনি উদ্বিগ্ন, কিন্তু অসুস্থ নন। আপনি হয়ত অনেক ভুল করেন, কিন্তু তার চেয়েও অনেক বেশি সঠিক কাজ করেছেন, সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জীবনে। নিজেকে দেখুন এবং শ্রদ্ধা করুন। আপনি নিজেই নিজেকে অবমূল্যায়ণ করলে অনুএরা আপনাকে মূল্য দিতে শিখবে না। উদ্বিগ্নতা আপনার হাতিয়ার, ব্যাধি নয়। তাই নিজের উপর ভরসা রাখুন। যোগ্য নেতা হয়ে উঠুন।
লিখেছেন
আফসানা সুমী

 

বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব নারী ব্যবসায়ীদের

চলতি অর্থবছরের ন্যায় আগামী বাজেটে (২০১৬-১৭) নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে নারী ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিডব্লিউসিসিআই)।

একইসঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য জাতীয় টাক্সফোর্স গঠন, সবক্ষেত্রে ৪ শতাংশ ভ্যাট ও সিআইপি নির্ধারণে আলাদা কোটা রাখাসহ ৩১টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট আলোচনায় সংগঠনটির সভাপতি সেলিমা আহমাদ এসব প্রস্তাব করেন।

সেলিমা আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের জন্য তৃণমূল নারী উন্নয়ন জরুরি। অর্থমন্ত্রী নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আলাদা ঋণের ব্যবস্থা করেছেন। তাই চলতি অর্থবছরের মতো এবারও জাতীয় বাজেটে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চলমান রাখা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, একইসঙ্গে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ট্রেড লাইসেন্স ফি পূর্বের হারে ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে নতুন উদ্যোক্তা এগিয়ে আসবে না। নারী উদ্যোক্তারা অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে তাদের ব্যবসা পরিচালনা করে থাকেন। ব্যবসা করতে গিয়ে মূসক, আয়কর দিয়ে দিন শেষে তাদের লাভের খাতা একেবারেই শূন্য থাকে। এ কারণে ব্যবসায় নারীদের অংশগ্রহণও অনেক কম।

নারীদের ব্যবসায় অন্তর্ভুক্ত করতে সর্বাবস্থায় ৪ শতাংশ ভ্যাট রাখা, নারীদের ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়কর সীমা ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আয় ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত রাখা ও মেশিনারি আমদানিতে কর মওকুফ করার প্রস্তাব করেন তিনি।

নারী উদ্যোক্তাদের হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়ে বিডব্লিউসিসিআই সভাপতি বলেন, নারীদের জন্য দেশের সব জায়গায় ব্যবসা সহজ নয়। এজন্য আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলাগুলোতে নিবন্ধন ফ্রি ও পাঁচ লাখ টাকার পণ্য ফি ছাড়া প্রবেশের সুযোগ দেওয়া দরকার। এছাড়া নারী উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ, উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানকে রেয়াদ দেওয়া, সিআইপি নির্ধারণে নারী উদ্যোক্তা কোটা রাখার প্রস্তাব করছি।

নারী উদ্যোক্তারা তাদের পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে অনেক সময় কাস্টমসে হয়রানির শিকার হন। তাই নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য আমদানি ও রপ্তানিতে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া দরকার বলে জানান তিনি।

সেলিমা আহমাদ বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সব ব্যাংকে ১৫ শতাংশ এসএমই লোন নির্ধারণ করে দেওয়া দরকার। সব কর্মাসিয়াল ব্যাংকে কমপক্ষে তিন শতাংশ পল্লী ঋণের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি পৃথক ব্যাংক প্রতিষ্ঠা ও সুদের হার ৭-৮ শতাংশ নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

প্রাক-বাজেট আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান।