banner

শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

ভিসা ছাড়াই ইন্দোনেশিয়ায় হানিমুন ট্যুর

রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলের বল রুমে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘নভোএয়ার-ঢাকা ট্রাভেল মার্ট-২০১৬’ শুরু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় মেলায় প্রবেশ করতেই দেখা গেল, হানিমুন ট্যুরস অ্যান্ড  ট্রাভেলস এর স্টলে দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। দেশি-বিদেশি যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে নানা বয়সের দর্শকরা এই স্টলের দিকে ছুটছেন।

মানুষের এত ভিড় দেখে মেলায় আসা উৎসুক জনতাও ভিড়ে যাচ্ছেন সেখানে। কারণ একটাই- মেলা উপলক্ষে ভিসা ছাড়া ইন্দোনেশিয়া (বালি) ভ্রমণের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে হানিমুন ট্যুরস অ্যান্ড  ট্রাভেলস। জানা গেল, ভিসা ছাড়া হানিমুন ট্যুরে মাত্র ৫৯ হাজার ৯০০ টাকায় ৪ রাত ৫ দিনের জন্য পর্যটন শহর ইন্দোনেশিয়ার বালিতে নেয়া ও আনার ব্যবস্থা রয়েছে। এই প্যাকেজের পাশাপাশি যে কোনো দেশের এয়ার টিকেটেরও ব্যবস্থা করে দিচ্ছে তারা।

হ্যানিমুন ট্যুরস অ্যান্ড  ট্রাভেলস এর ম্যানেজার মহিউদ্দিন সজল জানান, গত ৬ বছরে ৬০ হাজারেরও বেশি পর্যটক আমাদের সঙ্গে ভ্রমণ করেছেন। এবার এই আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা উপলক্ষে এই প্রথম ভিসা ছাড়া পর্যটকদের ভ্রমণের সুযোগ করেছি। শুধু পাসপোর্ট হলেই হবে। ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও আরও ৩৫টি দেশে যাওয়ার প্যাকেজ ঘোষণা করেছি।

এর মধ্যে সিঙ্গাপুর+মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে যাওয়ার জন্য ৫ রাত ৬ দিন ৫৪ হাজার ৯০০ টাকার প্যাকেজে নিয়ে যাবে রাখবে ঘুরাবে এবং ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। মালয়েশিয়া+ভিয়েতনাম ও সিঙ্গাপুর ৬ রাত ৭ দিন জনপ্রতি ৯৫ হাজার টাকায়, সিঙ্গাপুর-ফিলিপাইন ও মালয়েশিয়া ৬ রাত ৭দিন জনপ্রতি ৮৫ হাজার টাকায়, সিঙ্গাপুর+মালয়েশিয়া+ইন্দোনেশিয়া+থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া ৯ রাত ১০ দিন জন প্রতি ৯৯ হাজার টাকায় আশা-যাওয়া ব্যবস্থা করার বুকিং নেয়া হচ্ছে।

এছাড়া ইন্দোনেশিয়া+সিঙ্গাপুর+মালয়েশিয়া+থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারে ১০ রাত ১১দিন মাত্র ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা, শ্রীলঙ্কা+মালদ্বীপ ৫ রাত ৬দিন মাত্র ৬৮ হাজার টাকায়, সিঙ্গাপুর ২ রাত ৩দিন ৩৯ হাজার টাকায় ভ্রমণ করা যাবে।

শুধু হানিমুন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসই নয় পর্যটন এ মেলায় স্বাগতিক বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ৫০টির অধিক সংস্থা অংশ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে জাতীয় পর্যটন সংস্থা, বিমান সংস্থা, ট্রাভেল ও ট্যুর অপারেটর, হোটেল ও রিসোর্ট, পর্যটন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলো দর্শনার্থীদের জন্য হ্রাসকৃত মূল্যে বিমান টিকেট, আকর্ষণীয় ট্যুর প্যাকেজসহ বিভিন্ন সেবা উপস্থাপন করছে।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা ‘নভোএয়ার-ঢাকা ট্রাভেল মার্ট-২০১৬’ উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। পর্যটন বিষয়ক পাক্ষিক ‘দি মনিটর’এর মেলাটির আযোজন করে এবং উদ্বোধনের পর পরই সকলের জন্য খুলে দেয়া হয়।

ট্যুরিজম মালয়েশিয়া এবং ট্যুরিজম অথোরিটি অব থাইল্যান্ড বিটুবি মিটিংসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। ট্যুরিজম মালয়েশিয়ার উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলসহ একটি সাংস্কৃতিক দলও এ মেলায় অংশ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।

শুক্রবার প্রথমদিন বিকেল ৪টা থেকে রাত ৯টা এবং আগামীকাল শনিবার থেকে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে। মেলায় প্রবেশমূল্য রাখা হয়েছে জনপ্রতি ২৫ টাকা। প্রবেশ কুপনের ওপর মেলার শেষদিন (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গ্র্যান্ড র‌্যাফেল ড্র’র ব্যবস্থাও থাকবে। র‌্যাফেল ড্র বিজয়ীদের জন্য রয়েছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন গন্তব্যে এয়ার টিকেট, ট্যুর প্যাকেজ, তারকা হোটেলে রাত্রিযাপন, লাঞ্চ ও ডিনার কুপণসহ বিভিন্ন পুরস্কার।

 

বৈশাখী সাজে বাঙালি নারী

বাঙালি প্রাণের উৎসবে মাতে পহেলা বৈশাখে। সব ভেদাভেদ ভুলে সবার মনে বয়ে যায় একই আনন্দ। তাই মাতামাতিটা একটু বেশিই থাকে। পহেলা বৈশাখ মানেই ঘোরাঘুরি, আড্ডা অনুষ্ঠান আর একটু বাড়তি সাজ। দিনভর সুন্দর সাজে নিজেকে পরিপাটিও দেখতে চান সবাই। সেজন্য দরকার আরামদায়ক সুন্দর সাজ।

শাড়ি-ব্লাউজ

পহেলা বৈশাখে সাজটি হতে হবে অন্যান্য সময়ের থেকে বর্ণিল। বৈশাখে তীব্র গরমে শান্তি পেতে পোশাক নির্বাচনে সতর্ক হতে হবে। এক্ষেত্রে সুতির শাড়ি বা সালোয়ার কামিজ বেশি আরামদায়ক। শাড়ির ক্ষেত্রে আপনি তাঁতের শাড়ি, ঢাকাই জামদানি বা টাঙ্গাইলের শাড়ির প্রাধান্য দিতে পারেন। বর্তমানে শাড়িতে ব্লক-বাটিক, এ্যাম্ব্রয়ডারি এবং স্ক্রিন প্রিন্টের কাজ বেশ চলছে। খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন একটু উজ্জ্বল রঙের হয়। সাদা-লাল, সাদা-সবুজ, অথবা সাদার সঙ্গে অন্য যে কোন রঙের মিশ্রণ হোক না কেন, সেটা অবশ্যই উজ্জ্বল হতে হবে। বৈশাখে শুধু যে সাদা-লালই পরতে হবে এমন কোন কথা নেই। আপনি আপনার পছন্দ মতো যে কোনো শাড়িই পরতে পারেন। শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের রঙ এবং ডিজাইনেও আনতে পারেন কিছুটা চমক। এক্ষেত্রে আপনি ব্লাউজে বিভিন্ন ডিজাইন দিয়ে তৈরি করতে পারেন। ব্লাউজটি হতে হবে উজ্জ্বল রঙের। এটি আপনি আপনার পছন্দ মতো ছোট হাতা, থ্রি-কোয়ার্টার অথবা ফুলহাতা যেভাবে খুশি পরতে পারেন, এটি আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের ওপর নির্ভর করবে। ব্লাউজের ক্ষেত্রেও সুতি কাপড় ব্যবহার হবে বুদ্ধিমানের কাজ, এটি গরমে বেশ আরামদায়ক হবে।

সাজগোজ

রমণীদের সাজগোজের অন্যতম একটি বিষয় হচ্ছে সুন্দর মেকআপ। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই আগের দিন ফেসিয়াল করে নিতে হবে, যার ফলে মেকআপ সহজেই মুখে বসে যাবে। যদি পার্লারে গিয়ে মেকআপ করা সম্ভব না হয়, তাহলে ঘরে বসেই ফেসিয়াল করে নিতে পারেন।

রেশমি চুড়ি

বঙ্গ ললনাকে চুড়ি ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। যেহেতু বৈশাখ, সেহেতু আপনি আপনার দুহাতে কাঁচের রেশমি চুড়ি পরতে পারেন। অথবা মাটির চুড়ি ও গহনা পরে নিজেকে সাজিয়ে নিতে পারেন।

চোখ

চোখের সাজ ছাড়া বাঙালি ললনাকে কল্পনাই করা যায় না। আর সেটা যদি হয় পহেলা বৈশাখ, তাহলে তো কথাই নেই। চোখ মানুষের সৌন্দর্যের আলাদা একটি আকর্ষণ। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে চোখে স্যাডো দিতে পারেন। এই সাজ আপনার চোখকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।

ঠোঁট

নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ঠোঁটের সাজও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আপনার বৈশাখী পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে লিপিস্টিকের ব্যবহার করতে পারেন। এতে লাল বা অন্য কোন রঙের লিপিস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। তবে বৈশাখীতে লালের ব্যবহার বেশিই হয়।

চুল

চুল বাঙালি নারীর অহঙ্কার। পোশাকের সঙ্গে চুলের সাজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি চুল স্ট্রেইট হয়, তাহলে চুলে খোপা বা বেণী করে নিতে পারেন। তবে সারা দিনের জন্য খোপা করাটাই বুদ্ধিমতির কাজ। এছাড়া আপনি বিভিন্ন সাজে আপনার চুলকে সাজাতে পারেন। তবে অবশ্যই চুলে ফুল থাকা চাই। এক্ষেত্রে গোলাপ, গাদা, গাজরা, বেলি কিংবা জুঁই ফুলের মালা লাগাতে পারেন।

 

একাকীত্ব পছন্দ করে ৩২ লাখ, ৮০ লাখ রোগা

দেশের ৮ শতাংশ শিশু একাকীত্ব নিয়ে বেড়ে উঠছে, যার সংখ্যা ৩২ লাখ। আর ২০ শতাংশ অর্থাৎ ৮০ লাখ শিশু রোগা, বাবা-মা রোগাক্রান্ত এমন শিশুর ক্ষেত্রে এর সংখ্যা ৩৪ শতাংশ বা ১ কোটি ৩৬ লাখ। সারা দেশে মোট ৪ কোটি শিশুর হিসাবে এই অনুপাত দেয়া হয়েছে।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), পল্লীমা গ্রীণ এবং মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশন শিশু-কিশোরদের পরিবেশ, জীবনচর্চা এবং রোগ নিয়ে ঢাকার ৪টি স্কুলের ৭ থেকে ৯ বছর বয়সী ১ হাজার ৪৫১ শিক্ষার্থীর ওপর একটি গবেষণা পরিচালনা করে এ তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে ৮৫৮ জন মেয়ে এবং ৫৯৩ জন ছেলে।

বাংলাদেশের শিশুদের বেড়ে ওঠার পরিবেশ এবং জীবনাচার পদ্ধতির বর্তমান পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরতেই এ গবেষণা পরিচালনা করা হয়। শুক্রবার পল্লীমা সংসদ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

সমীক্ষায় দেখা যায়, ৭ থেকে ১৫ বছরের বয়সী শিশু-কিশোরদের ৮ শতাংশ একাকী থাকতে পছন্দ করে। দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ধরা হলে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২ লাখ। শিশু-কিশোরদের এই একাকীত্ব তাদেরকে সামাজিক নানা অবক্ষয়ের দিকে ঠেলে দেবে, যা ইদানীং অনেক বেশি দেখা যাচ্ছে।

সমীক্ষায় আরো দেখা গেছে, সময়মত খাবার খায় না ৭৪ শতাংশ শিশু। ২২ শতাংশ শিশু পড়ার টেবিল, বইখাতা গুছিয়ে রাখে না। দাঁত ব্রাশ করে না ৪ শতাংশ শিশু। শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করে না ৫৯ শতাংশ। কাপড়-চোপড় নিজে পরিষ্কার করে না ৫৯ শতাংশ। ১৮ শতাংশ শিশু মা-বাবার কাজে সহযোগিতা করে না। সন্তান নিজের কাজ করুক যেসব মা-বাবা চান না এর পরিমাণ ৩ শতাংশ। মা-বাবার মতে সন্তানের ওজন অস্বাভাবিক এমন শিশুর সংখ্যা ৩৩ শতাংশ।

পবার চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন পবার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী। বক্তব্য রাখেন পবার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. আবদুস সোবহান,  পল্লীমা সংসদের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুর রহমান ময়না, সভাপতি প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান হাফিয, সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান, পল্লীমা গ্রীণের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান লিটন, সদস্য সচিব আনিসুল হোসেন তারেক, মার্শাল আর্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আতিক মোরশেদ,  সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আশরাফ কায়সার, ডা. সমীর কুমার সাহা, শিশু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সাদিয়া শারমিন উর্মী প্রমুখ।

এ থেকে উত্তোরণের জন্য বেশ কিছু সুপারিশও দিয়েছে সংগঠনগুলো। এর মধ্যে- শিশু-কিশোরদের সামাজিকতায় ফিরিয়ে আনতে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং রাষ্ট্রের উদ্যোগ গ্রহণ করা; শিশুদের লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও শরীরচর্চার সুযোগ করে দেয়া; এজন্য প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকায় খেলার মাঠের ব্যবস্থা করা; সার্বক্ষণিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও প্রযুক্তিতে আসক্ত শিশুদেরকে তা থেকে দূরে রাখা।

 

বিপাশার অনামিকায় বিয়ের আংটি

অবশেষে ‘বং বিউটি’ বিপাশা বসুর অনামিকায় উঠেছে বিয়ের আংটি। করন সিং গ্রোভারের সঙ্গে বিপাশার বিয়ের দিনক্ষণও চূড়ান্ত। বিয়ে হচ্ছে ৩০ এপ্রিল। এই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতায়, আয়োজনে থাকবে ষোলো আনা বাঙালিয়ানা। আর বিষয়টি করন মেনে নিয়েছেন সানন্দেই।

যা হোক, হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বলিউডের সংবাদমাধ্যমগুলো বিপাশা-করনের বিয়ের দিনক্ষণ জানানোর পাশাপাশি টুকিটাকি, করন-বিপাশার আশপাশের বিষয় নিয়েই এখন সরগরম করে তুলছে চারপাশ।

তবে এসব খবরের মধ্যে বিপাশার অনামিকায় জ্বলজ্বলে হিরের আংটিটি নজর কেড়েছে সবচেয়ে বেশি। হিন্দুস্তান টাইমস লিখেছে, ‘বিপাশার বিয়ের আংটিটি স্বপ্নের মতো’। এ নিয়ে অবশ্য বিপাশার কোনো মন্তব্য মেলেনি।

এদিকে বিপাশা-করণ তাঁদের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে যৌথভাবে সবাইকে ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা আর ভালোবাসা জানানোর পাশাপাশি ৩০ এপ্রিল তাঁদের বিয়ের খবরটি জানিয়ে ছবি পোস্ট করেছেন।

ইনস্টাগ্রামে এই জুটি জানিয়েছেন, তাঁরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে সবাইকে জানাচ্ছেন যে ৩০ এপ্রিল বিয়ে করতে যাচ্ছেন তাঁরা। এ বিয়ে হবে অত্যন্ত ঘরোয়া পরিবেশে। সবার আন্তরিকতা, সহযোগিতা আর ভালোবাসার জন্য বিপাশা-করন যারপরনাই কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতের পথচলায় সবার শুভেচ্ছা আর আশীর্বাদ চেয়েছেন এই জুটি।

 

‘অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান যেন ভুলে যেয়ো না…’

কেমন ছিল তনুর জীবনের শেষ দিনগুলো? তনুকে নিয়ে স্মৃতিচারণা করেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের একজন কর্মী।

ওকে প্রথম কবে দেখেছি, ঠিক মনে নেই। একদিন আবিষ্কার করলাম, আমাদের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারে একজন উচ্ছল নবীন কর্মী যুক্ত হয়েছে। নাটকের ব্যাপারে নিবেদিতপ্রাণ, নাচ-গানে পারদর্শী; এক কথায় সম্ভাবনাময়। ওর নাম সোহাগী জাহান, সবাই ডাকতাম তনু বলে। গত বছরেই থিয়েটারে যোগ দেয় ও, সদস্য হিসেবে। আমরাই অডিশন নিয়েছিলাম। তনু আমার গ্রুপে ছিল না। পরে শুনেছি, অডিশনের দিনই সবাই ওর প্রতিভার ঝলক দেখেছিল। প্রতিভার প্রমাণও তনু রেখেছিল অল্প কয়েক দিনেই। কলেজ ক্যাম্পাসে, মঞ্চে ও হয়ে উঠেছিল সবার প্রিয়মুখ।

থিয়েটারের সদস্য হওয়ার পর যা হয়, আমরা অর্থাৎ বড়রা নবীনদের প্রশিক্ষণ দিই। প্রশিক্ষণে মাঝেমধ্যে ও দেরি করে আসত। স্বাভাবিকভাবেই আমরা হয়তো বকাঝকা দেওয়ার চেষ্টা করতাম। কিন্তু শেষমেশ পারতাম না! নামের সঙ্গে ওর চরিত্রের মিল ছিল, একটু আহ্লাদী ধরনের ছিল। বকা দিতে গেলেই বলে উঠত, ‘ভাইয়া ভাইয়া, প্লিজ বকা দেবেন না! আর কখনো দেরি হবে না!’ সত্যিই, তনু আর থিয়েটার ক্লাসে দেরি করে আসবে না! তনু ঘড়ির কাঁটার ঊর্ধ্বে চলে গেছে!

তনুকে কখনো গোমড়ামুখে দেখিনি। ওর মুখে হাসি লেগে থাকত। চমৎকার নাচত, ফলে ওর চোখেও হাসি হাসি ভাবটা থাকত সব সময়। ছোটবেলা থেকেই নাচ শিখত; ফলে থিয়েটারে এসে নতুন করে অনেক কিছুই শেখাতে হয়নি ওকে। কেবল কি নাচ? গানের গলাও ছিল মিষ্টি। থিয়েটারে একসঙ্গে এত গুণের একজনকে পেলে কার না ভালো লাগে! নবীন কর্মী বলে কোনো নাটকে অভিনয়ের জন্য মঞ্চে ওঠা হয়নি তনুর। প্রথম প্রথম যেটা হয়, মঞ্চের পেছনে কাজ করে নবীনরা। তনুও তা-ই করত। গোমতীর উপাখ্যানপাপ ডাকে অন্ধকার নাটক দুটির নেপথ্যসংগীত গেয়েছিল তনু। ১৩ ও ১৪ মার্চে আমরা পয়লা বৈশাখের প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। সেখানে বিপুল উৎসাহে অংশ নিয়েছিল তনু। আমাদের অনুষ্ঠানমালায় ওর নাচ ছিল গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। তনু নেই, এবারের পয়লা বৈশাখ আমাদের জন্য এত বিষাদের হবে, কে জানত!

ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের কর্মীদের সঙ্গে তনু। ছবি: সংগৃহীতকেবল থিয়েটারে নয়, অল্প কয়েক দিনে কলেজের অনেক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিল তনু। শিক্ষকেরাও ওর নাম শুনলে নিশ্চিন্ত হতেন, ‘ও, তনু আছে? তাহলে তো চিন্তা নেই।’ নবীনবরণ অনুষ্ঠানে নিজে থেকেই গান গাওয়ার কথা বলেছিল ও। গত মার্চ মাসে কলেজের বার্ষিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিল। সর্বোচ্চ তিনটি বিভাগে অংশ নেওয়া যায়। তিনটিতে অংশ নিয়ে তনু পুরস্কার জিতেছিল তিনটি বিভাগেই! একক নৃত্যে প্রথম, দ্বৈত নৃত্য ও সংগীতে দ্বিতীয়। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার কথা ছিল ২৬ মার্চে। সে সুযোগ আর হলো না! কেবল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের গণ্ডিতেই নয়, তনুর প্রতিভা ছড়িয়ে পড়েছিল আরও বড় পরিসরে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলোর মধ্যে যে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা হয়, সেখানেও তনু সফল। নৃত্যে প্রথম হয়েছিল জেলা পর্যায়ে। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় পর্যায়ে অংশ নিতে গিয়েছিল চট্টগ্রামে। ভালো করেছিল সেখানেও।

খুব সাধারণ আর পরিপাটি ছিল তনু। এক বছরে ওকে আমি তিনটি পোশাকই পরতে দেখেছি। থিয়েটারের কর্মীদের ব্যাপারে খোঁজখবর রাখতে হয় আমাদের। ফলে কর্মীরা ক্লাসে বা ক্যাম্পাসে ভালো-মন্দ কেমন করছে, তা-ও আমরা জানতাম। তনুর ব্যাপারে সব সময় ইতিবাচক মন্তব্যই শুনেছি। বন্ধুবান্ধব ও শিক্ষকদের সঙ্গে ওর খুব ভালো সম্পর্ক ছিল।

ওর মৃত্যুর আগে আগে, ১৭ মার্চ আমরা গিয়েছিলাম শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়ায়। সেখানে আমাদের থিয়েটারের পালাবদল ও কর্মী মূল্যায়নের অনুষ্ঠান ছিল। খুব চমৎকার সময় কেটেছে সবার সঙ্গে। ১৮ মার্চ তনু এল আমার কাছে। লাফাতে লাফাতে এসে বলল, ‘ভাইয়া, আপনার সঙ্গে একটা ছবি তুলব।’ ছবি তুলল। সারা দিন কথায়, গানে মাতিয়ে রাখল সবাইকে। চা-বাগানের সবুজে ও ছিল আরও সবুজ, আরও উজ্জ্বল। সেখান থেকে ফিরতি বাসে উঠলাম আমরা ১৮ মার্চেই। বাসে ও একটা গান গাইল, ‘অশ্রু দিয়ে লেখা এ গান যেন ভুলে যেয়ো না…’। কী যে চমৎকার গাইল! এখনো কানে লেগে আছে! কুমিল্লা শহরে ঢোকার আগেই ওর বাসা। বাস থেকে নামবে। ওর ভাই এসেছে নিতে। থিয়েটারের বড় ভাই হিসেবে দায়িত্বের জায়গা থেকে বললাম, ‘বাসায় গিয়ে ফোন করো।’ বাসায় গিয়ে ঠিকই ফোন করল। বলল, ‘ভাইয়া, বাসায় এসে পৌঁছেছি।’ সেটাই ওর সঙ্গে শেষ কথা হবে কে জানত!