banner

শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে খুবই সামান্য

বিশ্বজুড়ে গত ২০ বছরে কর্মক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে খুবই সামান্য। এক্ষেত্রে সামান্য কিছু প্রান্তিক অগ্রগতি ছাড়া আর তেমন কোনো উন্নয়ন হয়নি বললেই চলে। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) এক জরিপে বেরিয়ে এসেছে এ তথ্য।

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আইএলও জানায়, ১৯৯৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের পার্থক্য কমেছে মাত্র ০.৬ শতাংশ। যেসব দেশে নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের সুযোগ বেশি সেসব দেশেও তাদের চাকরির মান এখনো উদ্বেগের একটি বিষয়।

বিশ্বের ১৭৮টি দেশে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের হার, কর্মপরিবেশসহ নানা তথ্য সংগ্রহ করে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

আইএলও প্রধান গাই রাইডার বলেছেন, ’নারীরা যে এখনো উপযুক্ত কাজ খুঁজে পেতে প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছেন তারই প্রমাণ এই প্রতিবেদন। নারীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের ব্যাপারে যে অগ্রগতি হয়েছে তা একেবারেই প্রান্তিক পর্যায়ে’।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সালে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ পুরুষদের চেয়ে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ কম ছিল। ১৯৯৫ সালে এ পার্থক্য ছিল ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ। আর এ হার ২০ বছর আগের হারের চেয়ে মাত্র ০.৬ শতাংশ কম।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়- বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে নারীরাই বেশি বেকারত্বে ভোগেন। বিশ্বজুড়ে নারী বেকারের হার ৬.২ শতাংশ যেখানে পুরুষদের বেকারত্বের হার ৫.৫ শতাংশ। চাকরির অভাবে প্রায়ই নারীদের নিম্ন মানের চাকরিতে যোগ দিতে হয়।

উচ্চ ও নিম্ন -সব ধরনের আয়ের দেশেই নারীর গৃহস্থালী কাজের জন্য কোনও পারিশ্রমিক হিসেব করা হয় না। মূলত, নারীরা কর্মক্ষেত্রে ও গৃহস্থালী কাজ মিলিয়ে পুরুষের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করে থাকেন বলেও গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

গবেষণায় বলা হয়েছে, বেশিরভাগ নারীকেই তার যোগ্যতার চেয়ে নিম্নমানের চাকরিতে যোগদান করতে হয়। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে নারীকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গৃহস্থালী কাজে জড়িত থাকতে হয় যার জন্য আর্থিক প্রতিদানও পান না তারা। গবেষকদের মতে, এসব চিত্র নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্রধান বাধা। আর তা থেকে উত্তরণের হারও আশানুরূপ নয়। এজন্য নারী-পুরুষ উভয়েরই ঐকান্তিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

ইসলাম নারীকে সম্পদের অধিকার দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

ইসলাম ধর্ম নারীদের সুযোগ দিয়েছে, সম্মান দিয়েছে। ইসলাম নারীকে সম্পদের অধিকারও করে দিয়েছে, যা অন্য কোনো ধর্মে নেই। এমনটাই বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহিলা এবং শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ‘অধিকার মর্যাদায় নারী-পুরুষ সমানে সমান’  আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইসলাম ধর্ম নারীকে সম্পদের অধিকার করে দিয়েছে। এ ধর্মে স্বামীর এবং পিতার সম্পত্তিতে নারীদের অধিকারের কথা বলা হয়েছে। সর্বপ্রথম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বিবি খাদিজা। ইসলামে প্রথম শহীদও ছিলেন একজন নারী তিনি বিবি সুমাইয়া।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের পর নির্যাতিত মা-বোনেরা কষ্টের মধ্যে দিয়ে জীবন যাপন করেছেন। বঙ্গবন্ধু সরকার তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। অনেক নির্যাতিতা মহিলাকে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘বিয়ের সময় নাম লিখতে হয়। কিন্তু তখন অনেক পিতা আত্মসম্মানের ভয়ে তার সম্ভ্রমহারা মেয়ের পরিচয় দিতে চাননি। তখন বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- পিতার নাম লিখে দাও শেখ মুজিবুর রহমান। পিতার ঠিকানা ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি। আমার মাও দাঁড়িয়ে থেকে অনেক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন।’

নারীরা মর্যাদা ও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত, যুদ্ধ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগেও নারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বেশি এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের আরো বেশি সচেতন হতে হবে। তবে নারীদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হবে। নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই গড়তে হবে। নিজের কর্ম এবং আত্মবিশ্বাসের মধ্য দিয়ে নিজেদের মর্যাদা নিজেকেই প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।’

মেয়েরা আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হলে সংসার-সমাজ সবাই তাকে দাম দেবে এ কথা বলে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, ‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে। মেয়েরা ঘরে ও বাইরে সবই পারে এটা তাকে প্রমাণ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমাজের সবার উন্নতি ছাড়া দেশ উন্নত হতে পারে না। নারী–পুরুষের সম্মিলিত শ্রম ও মেধা দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলবো।’

নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম এনডিসি।

 

নারীদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি প্রয়োজন

প্রত্যেক নারী যাতে নিজেদের দক্ষতা ও সৃজনশীলতার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে পারে সে জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সম্পদ ও সম্পত্তিতে সম-অধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আর এসব করতে পারলে তবেই ২০৩০ এর মধ্যে নারী-পুরুষের সমতা আনা সম্ভব। নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠা করা গেলেই কেবল জাতি হিসেবে আমরা সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাবো বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম ও বিকশিত নারী নেটওয়ার্কের উদ্যোগে গেন্ডারিয়া ফজলুল হক মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ‘২০৩০ এর অঙ্গিকার, নারী-পুরুষের সমতার’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।

তারা বলেন,  ‘২০৩০ এর অঙ্গীকার, নারী-পুরুষের সমতার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আমরা পালন করছি এবারের আন্তর্জাতিক নারী দিবস।

তারা আরও বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে নারী-পুরুষ সমতা প্রতিষ্ঠা করতে হলে নারীদের পরিপূর্ণ বিকাশের সুযোগ এবং উন্নয়নের চালিকাশক্তি হিসেবে তাদেরকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করার সম-সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে।

বক্তারা ২০৩০ সালের মধ্যে নারী-পুরুষের সমতার পরিবেশ তৈরিতে কয়েকটি অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করেন। সেগুলো হলো-

স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত সকল স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর সম-অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, প্রত্যেক নারী যাতে নিজেদের দক্ষতা ও সৃজনশীলতার সর্বোচ্চ বিকাশ ঘটাতে পারে সে জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি এবং তাদের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা, সম্পদ ও সম্পত্তিতে সম-অধিকার নিশ্চিত করা, অথনৈতিক কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি এবং জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর গৃহস্থালী কাজের অবদানকে স্বীকৃতি প্রদান, মেয়েদের বিয়ের বয়স নূন্যতম ১৮ বছর বহাল রেখে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন দ্রুত পাশ ও বাস্তবায়নে জনমত গড়ে তোলা, বাল্যবিবাহ, যৌতুক ও অ্যাসিড নিক্ষেপ-সহ নারীর প্রতি সকাল প্রকার নির্যাতন রোধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা, নারী-পুরুষের সমতাভিত্তিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘নারী উন্নয়ন নীতি-২০১১’ পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সম্মিলিত ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

গেন্ডারিয়া ফজলুল হক মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ দিলারা জাহানের সভাপতিত্বে এসময় বিশিষ্ট নারী উদ্যোক্তা  তাজিমা হোসেন মজুমদার প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন দি হাঙ্গার প্রজেক্টের আঞ্চলিক সমন্বয়কালী জনাব মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, অ্যাডভোকেট রাশিদা আক্তার শেলী, সুহৃদ সমাবেশের মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও রাবেয়া আক্তার রুমি।

 

পুরস্কৃত হচ্ছেন ৩২ নারী পুলিশ

পুলিশ বাহিনীতে কর্মরত নারীদের ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ছয়টি ক্যাটাগরিতে ৩২ নারী পুলিশ সদস্য ও একটি সংগঠনকে পুরস্কৃত করবে পুলিশ সদর দপ্তর। প্রথমবারের মতো প্রদান করা এই পুরস্কারের নাম ‘বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড’। জাতীয় ও আর্ন্তর্জাতিক শান্তি রক্ষার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি এবং অনুপ্রেরণা দিতে আইজিপি একেএম শহীদুল হক এ উদ্যোগ নিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে পুরস্কার হিসেবে থাকছে একটি ক্রেস্ট, একটি সনদপত্র ও ১০ হাজার টাকা। আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা’র (আইসিসিবি) রাজদর্শন হলে তাদের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরী।

প্রথমবার বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন- পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি মিলি বিশ্বাস, এসবির অ্যাডিশনাল ডিআইজি ইয়াসমিন গফুর, নরসিংদীর এসপি আমেনা বেগম, এসবির ফরিদা ইয়াসমিন, চাঁদপুরের এসপি শামসুন্নাহার, ডিএমপির এডিসি আবিদা সুলতানা, ডিএমপির এডিসি আসমা সিদ্দিকা মিলি ও ডিবির এসি মাহমুদা আফরোজ লাকী।

মেডেল অব কারেজ অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন- ডিএমপির এসি হোসনে আরা বেগম, সিএমপির সিনিয়র এসি মাহমুদা বেগম, র‌্যাব-৭ এর এএসপি শাহেদা সুলতানা, ঢাকার এএসপি (ফোর্স) মাকসুদা লিমা, সিএমপির পরিদর্শক মর্জিনা আক্তার মর্জু, ডিএমপির কনস্টেবল মিতা রানী বিশ্বাস, চাঁদপুরের কনস্টেবল তাহমিনা আক্তার ও এপিবিএন-১১ এর কনস্টেবল স্বপ্না আক্তার।

এক্সেলেন্স ইন অ্যাক্ট অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন- এসবির সিনিয়র এসি মাকসুদা আকতার খানম, আরএমপির পরিদর্শক মোহতারেমা আশরাফী খানম, ডিএমপির এসআই কুইন আক্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসআই রাজিয়া বেগম, ডিএমপির এসআই মোছা. রেজিনা বেগম, ডিএমপির এএসআই নাসিমা আক্তার, এসবির কনস্টেবল তাসলিমা আক্তার ও কিশোরগঞ্জের কনস্টেবল তানজিনা মাসুদ।

কমিউনিটি সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন- পুলিশ সদর দপ্তরের এসপি শামীমা বেগম, সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার খন্দকার নূর রেজওয়ানা পারভীন ও ডিএমপির সিনিয়র এএসপি মেরিন সুলতানা।

পিসকিপিং মিশন স্পেশাল অনার অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন- হাইওয়ে রেঞ্জের এসপি শাহীনা আমীন, সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার সামসুন নাহার, ডিএমপির এডিসি আল বেলী আফিফা, এসবির এএসপি এলিজা শারমীন ও এসবির এসআই রেহানা পারভীন।

এছাড়া এন্টারপ্রেণার উইমেন অর্গানাইজেশন অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছে পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক)।

উল্লেখ্য, ১৯৭৪ সালে ৬ জন নারী বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন। বর্তমানে এই বাহিনীতে অ্যাডিশনাল আইজিপি থেকে শুরু করে ৮ হাজার ৮২৪ নারী সদস্য কর্মরত।

 

পাবলিক বাসে ৪১% নারীই হয়রানির শিকার

গণপরিবহন তথা পাবলিক বাসে নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত না হওয়ায় ৪১ শতাংশ নারী যাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়। তাই বিদ্যমান আইন ও নীতিমালার বাস্তবায়ন সাপেক্ষে নারীদের নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে পাবলিক বাস ব্যবহার নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন নারী অধিকার আন্দোলন নেত্রীরা।

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স এর সভাকক্ষে পপুলেশন সার্ভিস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টার, একশন এইড বাংলাদেশ ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে “গণপরিবহনে নারীদের নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দে যাতায়াত নিশ্চিত করতে করণীয়” শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়।

মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, রাজধানী শহরে বসবাসকারী নারীদের মধ্যে ২০ দশমিক ৭ শতাংশ নারী পাবলিক বাসে যাতায়াত করেন। এসব নারী যাত্রীর মধ্যে ৪১ শতাংশ নারীই যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। এছাড়া ১৩ শতাংশ নারী যৌন হয়রানির ভয়ে পাবলিক বাস এড়িয়ে চলাচল করেন।

সভায় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি বলেন, নারীদের যথাযথ উন্নয়ন ছাড়া দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রয়োজনে গণপরিবহনে বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার করা যেতে পারে। নারীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে পুরুষদের দ্বারা। কাজেই তাদের আচরণগত পরিবর্তন আনা অত্যন্ত প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরও নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ যাতায়াত নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের সচিব শওকত আলী বলেন, সকলের নিরাপদ ও স্বচ্ছন্দ যাতায়াত নিশ্চিত করতে বিআরটিএ বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছে। ১৯৯০ সালে ঢাকায় নারীদের জন্য ২টি বাস চালু করা হয়। বাসে ৬টি, ৯টি ও ১৩টি আসন সংরক্ষিত আছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সকল জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করা হচ্ছে, যেখানে এ বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভার্সিটি প্রোগ্রাম এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার তাহমিনা ইয়াসমিন বলেন, বাংলাদেশের ৫১ শতাংশ নারী। এখানে নারীদের সুরক্ষার জন্য কেবলমাত্র আইন প্রণয়ন যথেষ্ট নয়। আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। বাসে মাত্র ৯টি সিট বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীদের জন্য অপ্রতুল। এ সংখ্যা বাড়াতে সরকারের উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবীরের সভাপতিত্বে সভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন-পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মারুফ হোসেন।