banner

শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ইং, ,

Daily Archives: May 1, 2025

 

হাদিসের আলোকে রাগ নিয়ন্ত্রণ

রাগ আমাদের জীবনের একটা প্রধান সমস্যা। ‘রাগকে নিয়ন্ত্রণ কর’- জীবনে একাধিকবার এ কথা শোনেনি; এমন মানুষ পাওয়া খুব কঠিন। আবার এই বিষয়টিকে খুব সুন্দরভাবে সমাধান করেছেন; এরকম মানুষও আছে। তবে যারা এ কাজটি খুব ভালোভাবে ভদ্রতার সাথে করতে পারে; তারা কোনো সাধারণ মানুষ নন। এ অসাধারণ মানুষের মধ্যে একজন আমাদের মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স:)।

এক মূহুর্তের রাগ, সারা জীবনের কান্না। আল্লাহ্ ﷻ বলেছেন – “তোমরা রাগকে গিলে ফেলো” (সূরা আলে ইমরান:১৩৪)। রাগ যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে রাগের মাথায় আমরা এমন কিছু করে বসতে পারি বা বলে বসতে পারি যার জন্য আজীবন অনুশোচনা করতে হবে।

আজ আমরা রাগ সংক্রান্ত ৩টি হাদিস সম্পর্কে জানবো। এই তিনটি হাদিস থেকে এটা দেখবো যে, কেউ যখন রাসূলুল্লাহ (স:)’কে রাগিয়ে দেয়ার মতো আচরণ করতেন, তখন তিনি ﷺ কীভাবে তা নিয়ন্ত্রণ করতেন:

১) আনাস (রা:) ছিলেন ৭-৮ বছরের ছোট্ট একটা ছেলে। তাঁর মা তাঁকে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কাছে পাঠিয়েছিলেন তাকে ছোটখাটো কাজ করে সহযোগীতা করার জন্য। যতোটা না কাজ করতেন তার চেয়ে বেশি দুষ্টুমিই করতেন। একদিন রাসূলুল্লাহ ﷺ আনাসকে (রা:) একটা কাজে বাইরে পাঠালেন। যাওয়ার পথে তিনি রাস্তার মধ্যে কয়েকজন ছেলেকে খেলা করতে দেখেছিলেন। তাদেরকে দেখে কাজের কথা ভুলে ছোট্ট আনাসও (রা) খেলায় মগ্ন হয়ে গেলেন। খেলার ঘোরে কতক্ষণ যে কেটে গেছে তাঁর আর সেই খেয়াল ছিল না। পরে হঠাৎ একসময় আনাস (রা) বুঝতে পারলেন যে, কেউ তাঁর পেছনে দাঁড়িয়ে আছেন।  তিনি মাথা ঘুরিয়ে দেখেন – একি! এ যে স্বয়ং রাসূলুল্লাহ ﷺ এক মুখ হাসি নিয়ে উপস্থিত!

রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁকে জরুরি কাজেই পাঠিয়েছিলেন। অনেক সময় পার হওয়ার পরেও যখন তিনি ফিরলেন না, তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর রেগে যাওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তিনি আনাস(রা:) এর উপরতো রাগলেনই না, বরং হাসি ভরা মুখে তাঁকে নিতে এলেন।

অনুসরণীয়-১: রাগকে হাসিতে রূপান্তর করুন।

২) একবার রাসূলুল্লাহ ﷺ দেখলেন, এক মহিলা কবরের সামনে খুব কান্নাকাটি করছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ তাকে বললেন,  “আল্লাহকে ﷻ ভয় করো এবং ধৈর্য ধরো।” তখন ঐ মহিলা রাসূলুল্লাহকে ﷺ চিনতে না পেরে রেগে গিয়ে বলে উঠলেন,  “যান এখান থেকে! আমার মতো বিপদতো আর আপনার হয়নি!” তিনি ঐ মহিলাকে কিছুই জবাব দিলেন না। শুধু চুপচাপ সেই স্থান থেকে চলে গেলেন।

অনুসরণীয় -২: রেগে থাকা মানুষকে বুঝাতে যাবেন না। কারণ, সে বুঝবে না। তাকে শান্ত হওয়ার জন্য সময় দিন।

৩) রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: “যে ব্যক্তি তর্ক করা ছেড়ে দিবে, সে যদি ভুলের পক্ষেও হয় তবুও সে জান্নাতের প্রান্তে বাড়ী পাবে। আর যে ব্যক্তি সঠিক হওয়ার পরেও তর্ক ছেড়ে দিবে, সে জান্নাতের মাঝখানে বাড়ী পাবে। আর যে ব্যক্তি নিজের চরিত্রের উন্নয়ন করবে সে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে বাড়ী পাবে।”

অনুসরণীয় -৩: রাগ বা তর্ক করার মতো কারণ থাকা সত্ত্বেও তা করবেন না। এসব না করে আল্লাহর ﷻ ওপর ছেড়ে দিন বিচারের ভার। এসব করে সাময়িক জয় পাওয়া যায় কিন্তু স্থায়ী সমাধান হয় না। আর কোনোকিছুর পরিবর্তন আপনি চাইলেই হবে না। যার সমস্যা তার একান্ত ইচ্ছা থাকলেই একমাত্র পরিবর্তন সম্ভব।

ইসলাম এমন একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান; যা আপনার জীবনকে শান্তিময় করে তুলবে, এই জীবনে এবং তার পরের জীবনেও। তাই শুধু বড় বড় উপদেশ দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি আল্লাহর প্রেরিত নবী-রাসুলরা। তাঁরা দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে তা বাস্তবে প্রয়োগ করতে হয়। একজন প্রকৃত মুসলিম ইসলামকে সঠিকভাবে মেনে চলেন নিজের জীবনের সুখ-সমৃদ্ধি আর অপার শান্তির জন্য। এতে তার ইহকাল এবং পরকাল এ দুঃসময়ের জন্যই পরম শান্তির বার্তা বয়ে আনে।

 

বৈচিত্রময় হিজাব

হিজাবের সাথে আধুনিক পোশাকের একটা মিশেল লক্ষ্য করা যায় । মুসলিম রাষ্ট্রগুলোতে নারীরা সাধারণত স্কার্ফ বা হিজাব পড়েন৷ মাথার চুল ঢেকে রাখাই এই হিজাবের মুখ্য উদ্দেশ্য৷

কিন্তু বর্তমানে এটি যেন ফ্যাশান অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে৷ আর তার ফলে ফ্যাশান মঞ্চেও এখন উঠে এসেছে হিজাব৷হিজাব আসলে কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়৷ এই ঢিলাঢালা পোশাকে শরীর ঢেকে রাখার পাশাপাশি আপনি কতটা আভিজাত্য ফুটিয়ে তুলতে পারেন, এর মাধ্যমে সেটাই প্রকাশ পায়৷ আর তার সঙ্গে সঙ্গে এটা বেশ আরামদায়ক পোশাক৷

দিনকে দিন বাড়ছে হিজাবের কদর। হিজাব এখন আর শুধু পর্দা করার কাজে আটকে নেই, ফ্যাশনের অন্যতম অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর তাই ব্যবসায়ীরাও ক্রেতার চাহিদার ভিত্তিতে বাজারে নিয়ে আসছে নানা ধরণের হালফ্যাশনের হিজাব।

শুধু দেশেই তৈরি হচ্ছে না, বিদেশ থেকে বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য থেকে হিজাব আসছে বাংলাদেশে। ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত বিপনীগুলোতে গড়ে উঠেছে হিজাবের দোকান। বর্তমানে সব বয়সী নারীরাই হিজাব পরছেন।

অনেকে ছোট্ট শিশুটিকেও হিজাব পরাচ্ছেন। এতে একদিকে যেমন বাইরের ধুলাবালি থেকে ত্বক ও চুলের সুরক্ষা হচ্ছে, অন্যদিকে ফ্যাশনে এসেছে নতুনত্ব।

হিজাব পরার টিপস:    হিজার পরার ক্ষেত্রে পোশাক বাছাইয়ের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। হিজাব পরতে পারেন শাড়ি, কামিজ, কুর্তা বা অন্য যে কোনো পোশাকের সঙ্গে। তবে হিজাব পরার আগে অবশ্যই লম্বা হাতা বা থ্রি কোয়ার্টার হাতার পোশাক বেছে নিতে হবে।

হিজাবের সঙ্গে ছোট হাতার পোশাক একদমই বেমানান। স্কুল-কলেজ, নানা ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠানসহ কর্মস্থলেও মেয়েরা অনায়াসে ব্যবহার করতে পারেন হিজাব।

পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে হিজাব পরলে খুব সুন্দর দেখায়। পরনের পোশাকটি বেশি নকশা করা বা প্রিন্টের হলে একরঙা হিজাবও পরতে পারেন।

3হিজাবকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে নানা ধরনের স্টাইল ব্যবহার করতে পারেন। বাজারে হিজাবের সঙ্গে পরার জন্য পাথর ও পুতির বিভিন্ন ডিজাইন করা ব্রোজ পাওয়া যায়।

চকচকে রঙের ব্রোজগুলোর ব্যবহার আপনাকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলবে। এছাড়া হিজাবের সঙ্গে মানানসই নানা পাথরের গহনাও এখন বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।

বর্তমানে মুসলমানদের মধ্যে বিয়ের কনের সাজেও স্বগর্বে স্থান করে নিয়েছে হিজাব। জমকালো সাজকে সবার কাছে আরও বেশি গ্রহণযোগ্য করতে হিজাবকে অনেকেই বেছে নিচ্ছেন।

কোথায় পাবেনঃ ঢাকার বসুন্ধরা সিটি,যমুনা ফিউচার পার্ক, নিউ মার্কেট, পিঙ্ক সিটি, এমনকি আপনার হাতের কাছে যে কোন বিপনি বিতানে।

চট্টগ্রামে মিমি সুপার মার্কেট, সেণ্ট্রাল প্লাজা, আফমি প্লাজা, মতি কমপ্লেক্সসহ প্রায় সব শপিংমলেই পাবেন আপনার পছন্দসই হিজাব ।

বাজারে কটন, লেস, জর্জেট ও সাটিনসহ নানা ধরনের কাপড়ের হিজাব পাওয়া যায়। কাপড়ের মান ও নকশার উপর ভিত্তি করে হিজাবগুলো পাবেন ১০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত।

আপনি চাইলে ঘরে বসেই বিভিন্ন অনলাইন সপগুলো থেকে আপনার হিজাবটি কিনে নিতে পারেন। তাই খুব সহজেই বেছে নিতে পারবেন সাধ্যের মধ্যে পছন্দের হিজাবটি।

 

হাল ফ্যাশনের অনুষঙ্গঃ ক্লাচ বা ছোট পার্স

ক্লাচ বর্তমানে তরুণীদের বহুল জনপ্রিয় ফ্যাশন অনুসংগ। আকারে ছোট আর হাতের মুঠোয় ধরে রাখা যাওয়ায় মেয়েরা এখন এই ব্যাগ বহন করছে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে। একটি ক্লাচ ব্যাগ কিন্তুhot-pink-fuchsia-clutch আপনার নিতান্ত সাদামাঠা পোশাককেও নিমেষে গ্ল্যামারাস করে দিতে পারে৷

তাই সংগ্রহে রাখুন কয়েকটি ক্লাচ ব্যাগ পার্টিতে বা কোনও অনুষ্ঠানে তো রোজকার ঢাউস ব্যাগটা নিয়ে যাওয়া যায় না৷ এত জিনিসপত্রেরও দরকার পড়েনা৷ তাই এই ধরনের অনুষ্ঠানে ক্লাচ ব্যাগের ব্যবহার অনেক দিন থেকেই চলে এসেছে৷ক্লাচ ব্যাগ রয়েছে নানা আকার আর উপকরণের।

চারকোণা, ডিম্বাকৃতি, গোলাকৃতি, পানপাতা আকৃতি, বেলুন আকৃতি, তিনকোণা, কাঠের হাতলসহ বাজারে রয়েছে নানা আকারের ক্লাচ ব্যাগ।

উপকরণে ব্যবহার করা হয়েছে সার্টিন, গার্মেন্ট ফেব্রিক, সিনথেটিক, লেদার, পাট, রেক্সিনসহ নানা কিছু। নজরকাড়া নকশা ক্লাচ ব্যাগের নানা ডিজাইন নজর কাড়ে খুব সহজেই।

এই ব্যাগ যেমন রয়েছে জমকালো নকশায় তেমনি রয়েছে সিম্পলে সুন্দরও। কারুকাজে ব্যবহার করা হয় আর্টিফিশিয়াল মুক্তা, স্টেন, পুঁতি, চুমকি, অন্টিক, ক্রিস্টালসহ নানা কিছু। রঙেও নান্দনিক ক্লাচ ব্যাগে খুঁজে পাওয়া যায় না এমন রঙ খুব কম রয়েছে। হোক সে চামড়ার ক্লাচ ব্যাগ কিংবা কাপড়ের।

সোনালি, সবুজ, হলুদ, লাল, গোলাপি, বেগুনিসহ রয়েছে নানা রঙের ক্লাচ ব্যাগ। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে পাওয়া যায় শেডের ক্লাচ ব্যাগও। যার একটি নেওয়া যাবে কয়েকটি পোশাকের সঙ্গে। কোন পোশাকে কেমন ক্লাচ ব্যাগ বিবিয়ানার ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, শাড়ির সঙ্গে ক্লাচ ব্যাগ বেশি মানানসই।

তবে জমকালো লং কামিজ, পার্টি পোশাকের সঙ্গে গর্জিয়াস ক্লাচ ব্যাগও মানানসই।

তাছাড়া বর্তমানে জমকালো ক্লাচ ব্যাগের শেপ ঠিক রেখে আর্টিফিশিয়াল লেদার, রেক্সিন, পাটের খুব সিম্পল নকশার কিছু ক্লাচ ব্যাগ বাজারে পাওয়া যায়। এগুলো নেওয়া যায় যে কোনো ধরনের সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে।

আবার একেক ধরনের শাড়ির সঙ্গে একেক ধরনের ক্লাচ ব্যাগ মানানসই। অঞ্জন’স, আড়ং, বিবিয়ানাসহ বেশ কিছু ফ্যাশন হাউসে জামদানি, তসর, কাতান কাপড় দিয়ে ডিজাইন করা ক্লাচ পাওয়া যায়।

এগুলো ভালো মানায় তসর, কাতান, বেনারসি, জামদানি শাড়ির সঙ্গে।

নানারকম স্টোনের ক্লাচ ব্যাগ ভালো লাগবে সিল্ক, সুতি, জর্জেট শাড়ির সঙ্গে।রেড বিউটি স্যালুনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বলেন, সব ধরনের সাজ, পোশাকের সঙ্গে ক্লাচ ব্যাগ মা1-2014-handmade-clutch-for-girls-collectionনানসই নয়।

ক্লাচ ব্যাগ যেমন আভিজাত্যপূর্ণ হয়, তেমনি সাজটিও হওয়া উচিত একটু গর্জিয়াস।

একদম সাদামাটা সাজের সঙ্গে হাতে ক্লাচ ব্যাগ ঠিক মানানসই নয়। তবে তাই বলে মেকআপে মুখখানি ভরে ফেলতে হবে, তা কিন্তু নয়। বেইজ মেকআপটা হালকাই করুন। তবে চোখটা একটু সাজাতে পারেন।

যদি দিনের সাজ হয় তাহলে হালকা শ্যাডো কিংবা শুধু আইলাইনার আর রাতের সাজে একটু গাঢ় শেডের শ্যাডো, গ্লিটার শ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে হেয়ার স্টাইলে কোনো বাছবিচার নেই। আপনার পছন্দমতো যে কোনো স্টাইলেই হেয়ার সেট করতে পারেন।

তবে বর্তমানে স্ট্রেইট, রোলার, এলোমেলো নানা ধরনের বেণি চলছে। করতে পারেন এসবও।

দরদাম

স্টোনের ক্লাচ ব্যাগ পাওয়া যাবে ৮০০-২০০০ টাকায়, পার্ল বসানো ক্লাচ ব্যাগ ২৫০০-৪০০০ টাকা, কাতান কাপড়ের ৬০০-১২০০ টাকা, জামদানি কাপড়ের ৮০০-১৫০০ টাকা, পুঁতি, পাট, চুমকি, অন্টিকের নকশা করা ক্লাচ ব্যাগ ৫০০-১০০০ টাকায়, বিবিয়ানা, বাংলার মেলা, অঞ্জন’সে কাতান কাপড়ের ক্লাচ ব্যাগ পাওয়া যাবে ৪০০-৯০০ টাকায়, মায়াসিরে বেনারসি, সিল্ক, তসর কাপড়ের লেইস বসানো ক্লাচ ব্যাগ ১০০০-২৫০০ টাকা। কোথায় পাবেন?

নানা ডিজাইনের ক্লাচ ব্যাগ পাওয়া যাবে বসুন্ধরা সিটি, নিউমার্কেট, আড়ং, অঞ্জন’স, মায়াসির, বাংলার মেলা, যমুনা ফিউচার পার্ক, রাপা প্লাজা, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটিসহ বিভিন্ন শপিংমল এ।

 

সহজেই দূর করুন আয়নার দাগ

যতই দিন যায়, আয়নার ঔজ্জ্বল্য ততই বিনষ্ট হয়। আয়নায় পড়ে হাজারো দাগ। সেই দাগ যতই তোলার চেষ্টা করুন না কেন, উঠবে না৷ তাই আজ খুব সহজে ঘরোয়া উপায়ে আয়নাকে দাগমুক্ত করতে দেওয়া হলো কিছু উপায়-

১. সংবাদপত্র

আয়না পরিষ্কারের সবচেয়ে সস্তা উপায় হচ্ছে সংবাদপত্র। পানিতে ভেজানো সংবাদপত্র দিয়ে আয়না ঘষে নিন। এবার নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। ইচ্ছে করলে ভিনেগার মেশানো পানিতেও সংবাদপত্র ভিজিয়ে নিতে পারেন। এটা আরো ভালো কাজ করবে।

২. সাদা ভিনেগার

একটি বোতলে এক কাপ ভিনেগারের সঙ্গে এক কাপ পানি ভালো করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি দিয়ে আয়নার ওপর স্প্রে করে নিন। কিছুক্ষণ পর ভেজানো তোয়ালে দিয়ে আয়না মুছে ফেলুন। দেখবেন, আয়নাটি নতুনের মতো ঝকঝক করবে এবং যেকোনো দাগ দূর হবে।

৩. শেভিং ফোম

সবচেয়ে বেশি দাগ পড়ে বাথরুমের আয়নায় যা সহজে উঠতেই চায় না। আয়নায় শেভিং ফোম মেখে কিছুক্ষণ পর নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। দেখবেন পানির সব দাগ উঠে যাবে। তবে মনে রাখবেন, আয়নার ওপর বেশিক্ষণ শেভিং ফোম রাখবেন না। এতে উল্টো দাগ পড়ে যেতে পারে।

৪. বেকিং সোডা

এক চা চামচ বেকিং সোডা একটি স্ক্রাবারে নিয়ে আয়নায় ভালো করে ঘষে নিন। এবার পানিতে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে মুছে নিন। দেখবেন, আয়নার দাগ এক নিমেষেই চলে যাবে এবং ঝকঝক করবে।

৫. ডিস্টিল্ড ওয়াটার

সাধারণ পানির চেয়ে আয়না বেশি পরিষ্কার হয় ডিস্টিল্ড ওয়াটারে। একটি তোয়ালের মধ্যে ডিস্টিল্ড ওয়াটার নিয়ে আয়না ভালো করে মুছে নিন। নিয়মিত ব্যবহার করবেন। এতে আয়না নতুনের মতো চকচক করবে।

 

অপরাজিতার নন্দিতা

দীপ্ত টিভির নিয়মিত শিল্পীদের একজন শারমিন আঁখি । টেলিভিশনটিতে প্রচার হওয়া অরিজিত মুখার্জির পরিচালনায় ওপার বাংলার প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক আশাপূর্ণা দেবীর উপন্যাস ‘বালুচারী’ অবলম্বনে টিভি ধারাবাহিক ‘অপরাজিতা’র নন্দিতা চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি।

‘অপরাজিতা’ সিরিয়ালে নিজের চরিত্র সম্পর্কে শারমিন বলেন, “ছটফটে ও চঞ্চল প্রকৃতির মেয়ে নন্দিতা।পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে বোন নন্দিতার অবস্থান সেঝো । ছোটবেলা থেকেই সংসারের টানা পোড়েন দেখে বেড়ে ওঠা নন্দিতার। তাই শুরু থেকেই নন্দিতা চরিত্রটি অনেক কেলকুলেটিভ। নিজের চাহিদাগুলো কিভাবে আদায় করে নিতে হয় তা শিখে নিয়েছে ছেলেবেলা থেকেই।”

অপরাজিতা মেগা সিরিয়ালটি শুক্রবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ছয়দিন রাত ৮.৩০ মিনিটে প্রচারিত হচ্ছে দীপ্ত টিভির পর্দায়। শারমিন আঁখির টেলিভিশন পর্দায় পথ চলা শুরু ২০১১ সালে দেবাশীষ বড়ুয়া দ্বীপের ‘ঘটক বাকী ভাই’ ধারাবাহিক নাটক দিয়ে । তারপর নার্গিস আক্তারের টেলিছবি ‘ভালোবাসা কী করে ভালো হয়’, দেবাশীষ দ্বীপের আরেকটি ধারাবাহিক ‘চারকন্যা’য় কাজ করেন। এরপর ইমরাউল রাফাতের ‘আপন খবর’, ধারাবাহিক ‘রাব্বু ভাইয়ের বৌ’, আশুতোষ সুজনের ‘বাইশে শ্রাবণ’, রাহাত কবিরের ‘না বলা কথা’ রাসেল শিকদার এর “গিটার” সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক একক ও ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছেন।

শিহাব শাহীন পরিচালিত ‘নীলাঞ্জলা’, ‘তোমার আমার বিয়ে’ এবং মিজানুর রহমান আরিয়ানের ‘উৎসর্গ’ , শুভ্র খান এর পরিচালিত ধারাবাহিক ‘অনাকাঙ্খিত সত্য’ তার উল্লেখযোগ্য কাজ।মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের প্রযোজনায় আবুল হোসেন খোকনের পরিচালনায় ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজের তার অভিনীত ‘জিনা’ চরিত্রটি দর্শকের দৃষ্টি কেড়েছে। প্রচারের অপেক্ষায় রয়েছে ফয়সাল খান রিপনের ‘মিছা কথার মেশিন’ এবং রাহাত কবিরের ‘ভালবাসার রঙ’, ‘সম্পর্কের আবর্তে’ সহ আরও বেশকিছু নাটক।

 

এবার দেখা যাবে তিশা-সোহম জুটি

ছোট পর্দায় জনপ্রিয়তা অর্জন করার পর বড় পর্দায় পদার্পণ করেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। অভিনয় করেছেন শাকিব খান ও আরিফিন শুভর বিপরীতে। এবার অভিনয় করতে যাচ্ছেন কলকাতার জনপ্রিয় নায়ক সোহমের বিপরীতে। ছবির নাম ‘তোর নামে লিখেছি হৃদয়’।

ছবিটি তৈরি হচ্ছে যৌথ প্রযোজনায়। প্রযোজনা করছে বাংলাদেশের এসএস মাল্টিমিডিয়া ও কলকাতার নায়াগ্রা এন্টারটেইনমেন্ট। পরিচালনা করবেন অনন্য মামুন এবং কলকাতার ভুবন চ্যাটার্জি। যৌথ প্রযোজনায় এটি অনন্য মামুনের দ্বিতীয় ছবি। আগেরটি ছিলো ‘আমি শুধু চেয়েছি তোমায়’।

এর আগে অনন্য মামুনের ‘অস্তিত্ব’তে অভিনয় করেছেন তিশা। আর তিশার আগে সোহম যৌথ প্রযোজনায় ‘ব্ল্যাক’ ছবিতে অভিনয় করেন। তার বিপরীতে ছিলেন বিদ্যা সিনহা মিম।

চলতি মাসের শেষ দিকে শুরু হবে দৃশ্যধারণ। ছবিটির জন্য গান তৈরি করছেন হাবিব ওয়াহিদ, নাভেদ পারভেজ, আকাশ প্রমুখ। তিশা-সোহম ছাড়াও থাকছেন সুচরিতা, মিশা সওদাগর, ডন, কলকাতার খরাজ মুখার্জি, সুপ্রিয় প্রমুখ।

 

শমী কায়সারের স্বপ্ন হিন্দি গানের কনসার্ট!

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর আল-বদরের হাতে অপহৃত হন লেখক শহীদুল্লা কায়সার। এরপর আর ফিরে আসেননি। স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন তিনি। অথচ তার কন্যা অভিনেত্রী, ব্যবসায়ী শমী কায়সার এ কি করলেন! এ কি বললেন! তা-ও স্বাধীনতার মাস মার্চেই!

শমীর প্রতিষ্ঠান ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন্স বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজন করে ‘অরিজিৎ সিং উইথ সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা’। শিরোনাম দেখেই বোঝা যাচ্ছে, এ কনসার্ট ছিলো ভারতীয় সংগীতের বর্তমান সেনসেশন অরিজিৎ সিংকে ঘিরে।

মধ্যভাগে মঞ্চে এসে শমী তার বক্তব্যের শুরুতে বলেন, ‘আমরা বারবার প্রমাণ করি, বাঙালি গান শোনে। বাঙালি নাটক দেখে। বাঙালি সংস্কৃতিকে ভালোবাসে।’ এরপর তিনি উল্লেখ করেন, ‘এটা অনেক বড় স্বপ্ন ছিলো। এতো বড় একটি স্বপ্ন সফল হয়েছে এক বছর ধরে। আমাদের এই স্বপ্নকে সফল করার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।’

শমীর মুখে এ কথা শুনে বিস্মিত হন অনেকে। যার বাবা শহীদ বুদ্ধিজীবী, তিনি হিন্দি গানের পসরা বসিয়ে নিন্দিতই হলেন বলা চলে। বিশেষ করে হিন্দি গানের কনসার্ট করা তার স্বপ্ন উল্লেখ করায় হতবাক সবাই। অরিজিৎ বলিউডের গান-বাজনায় হালের ক্রেজ ঠিকই, কিন্তু তাকে নিয়ে তো কনসার্ট আগেও ঢাকায় হয়েছে, এতে স্বপ্নের কি আছে ঠিক বোধগম্য হলো না বেশকিছু দর্শক-শ্রোতার।

তবে ব্যবসার জায়গা বা ব্যবসায়িক কৌশল থেকে ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন্স এমন কনসার্ট আয়োজন করতেই পারে। তাছাড়া সংগীতের কোনো সীমান্ত নেই, তাই হিন্দি গানের পসরাও তারা সাজাতে পারেন। এটা তাদের চেতনার ব্যাপার। কিন্তু বুদ্ধিজীবীর সন্তান হয়ে হাজার হাজার দর্শক-শ্রোতার সামনে এসে শমী যেভাবে গর্ব নিয়ে এটাকে স্বপ্ন বললেন, তা দৃষ্টিকটুই লেগেছে। শমী যতোটা না ব্যবসায়ী, তার চেয়েও অভিনেত্রী ইমেজটা ইতিবাচক। দর্শকদের মধ্যে তাকে নিয়ে এখনও দূষিত কোনো মনোভাব তৈরি হয়নি। সে ক্ষেত্রে এমন বক্তব্য সাংঘর্ষিক বলে মনে করা হচ্ছে।

অবশ্য কনসার্টের শুরুতে অদিত অ্যান্ড ফ্রেন্ডস বাংলা ভাষার গান গেয়েছেন। তাদের পরিবেশনায় ছিলো দেশাত্মবোধক গানও। যদিও বাংলাদেশি শিল্পীদের মধ্যে অদিতের নয়, গান গাওয়ার কথা ছিলো এলিটা ও মাহাদীর। কিন্তু প্রচারণায় অরিজিতকে প্রাধান্য দেওয়ায় তারা নিজেদেরকে সরিয়ে নেন। তাদের এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সংগীতশিল্পীরা।

গায়িকা আলিফ আলাউদ্দিন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, আজ থেকে বেশ অনেক বছর আগে সালমান খান ঢাকায় এসেছিলেন। গানের তালে হাত নাড়িয়ে তারপর চলে গেলেন। সেই অনুষ্ঠানে আমারও গাওয়ার কথা ছিলো, কিন্তু সেই একই কারণে গাইনি। আমার এসব বিষয় গায়ে লাগে। আমাদের সবারই গায়ে লাগে।’

গেলো বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আলিফ আরও লিখেছেন, ‘বলিউড তারকা হৃতিক রোশনের পাশে লোকগানের সম্রাজ্ঞী মমতাজের ক্ষুদ্র ছবি অতিশয় বেমানান। মমতাজ যে কোনো আন্তর্জাতিক তারকার চেয়ে যখন-তখন দর্শক মাতাতে সক্ষম। আমরা নিজেরাই নিজেদের ওপর আস্থা রাখতে পারি না। নিজেদেরকে নিয়ে লজ্জা হয়!’

প্রতিবাদ জানানোর জন্য এলিটা আর মাহাদীকে বাহবাও দিয়েছেন আলিফ। সংগীতশিল্পী প্রীতম আহমেদ লিখেছেন, ‘যাক, অন্তত মাহাদী ও এলিটা প্রমাণ করলো এখনও কিছু সংগীতশিল্পীর আত্মসম্মানবোধ আছে।’ দর্শক-শ্রোতাদের একজন ফেসবুকে মন্তব্য করেছেন, বিদেশি শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশীয় শিল্পীদেরকে হেয় করা উচিত নয়। এ ক্ষেত্রে প্রতিবাদ জানাতে জনসাধারণেরও উচিত এগিয়ে আসা।’

চলতি মাসে ভারতের আরও কয়েকজন সংগীতশিল্পীর অনুষ্ঠান হবে ঢাকায়। ১৮ মার্চ মোনালি ঠাকুর আর ৩১ মার্চ আসবেন ফারহান আখতার। শুক্রবার (১১ মার্চ) বিশাল-শেখরের আসার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়েছে। ভারতীয় শিল্পীদের প্রতি আয়োজকদের অতি আগ্রহে হতাশ শিল্পীসমাজ। গায়ক আসিফ আকবর তো অনেকদিন ধরেই এর বিরুদ্ধে বলে আসছেন, ফেসবুকেও লিখেছেন।

এবার মাইলস ব্যান্ডের শাফিন আহমেদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘কলকাতা থেকে আমার এক বন্ধু আমাকে জানালো, অরিজিৎ সিং আর্মি স্টেডিয়ামে ঢাকঢোল পিটিয়ে গান করবেন। ফারহান আখতার আসবেন ৩১ মার্চ। সেই বলিউড জোর করে শুনতেই হবে! বাংলা রক ভালো লাগে ওর। যাকে আমরা ব্যান্ড সংগীত হিসেবে উল্লেখ করি। ওপার থেকে এই বেদনা অনুভব করছে সে।’

শাফিন যোগ করে আরও লিখেছেন, ‘আমরা মাইলসের সদস্যরা জানি, কতোটা কঠিন ও কতো বছর সংগ্রাম করে বাংলা রককে বাংলাদেশের মূলধারার সংগীতের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আমরা এখনও লড়াই করে যাচ্ছি। কিন্তু যদি নিজের দেশের মানুষই তা বুঝতে না চায় এবং নিজেদের সংস্কৃতিকে সুরক্ষার ব্যাপারে উদ্যোগ না নেয়, তাহলে কে নেবে? বলিউডের সংগীত ও চলচ্চিত্র তারকাদেরকে প্রতি সপ্তাহে কতো টাকা দিয়ে দিচ্ছি আমরা? সে খেয়াল আছে কারও?’

শমী কায়সার কি এসব মন্তব্য দেখছেন? অরিজিৎ সিংকে এনে তিনি নিজের স্বপ্নপূরণ তো করেছেন, এবার বাংলাদেশের শিল্পীদের নিয়ে কিছু করুন ধানসিঁড়ি কমিউনিকেশন্স থেকে। যে দেশটাকে স্বাধীন করার জন্য তার বাবা শহীদ হয়েছেন। যার সবচেয়ে গর্বের পরিচয়, তিনি শহীদের সন্তান।