অপরাজিতাবিডি ডটকম, কক্সবাজার: মিয়ানমার থেকে এখন ‘স্ত্রী’ ভাবে দাবি করে কৌশলে নারী আমদানি বা পাচার হয়ে আসছে। মিয়ানমারের নারীদের কাগজপত্রে বাংলাদেশী হিসেবে দেখিয়ে মোটা অংকের যৌতুকের বিনিময়ে তাদের বিয়ে করে বাংলাদেশ ঢোকাচ্ছেন উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তের গ্রামবাসীরা। এভাবে বিয়ের নামে ‘স্ত্রী’ করে আনার মাধ্যমে মিয়ানমারের নারীদের পাচার করে বাংলাদেশ আনা হচ্ছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া-টেকনাফে বিনা বাধায় স্থানীয় বাংলাদেশী যুবক, কিশোর এমনকি বৃদ্ধরা পর্যন্ত বিনা রেকর্ডে অর্থাৎ কাবিননামা ছাড়া অহরহ বিয়ে তো করছেনই, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে বাংলাদেশী সাজিয়ে রীতিমত অনুষ্ঠান করে ও কাবিননামা সম্পাদন করে সরাসরি মিয়ানমার থেকে মিয়ানমারের নাগরিক নারীদের ‘স্ত্রী’ করে নিয়ে আসছেন। চোরাই পণ্যের তালিকায় এবার যুক্ত হয়েছেন রোহিঙ্গা নারীরাও।
সাম্প্রতিক সময়ে সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে রোহিঙ্গা নারীদের বিয়ে করার প্রবণতা উদ্বেগজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং উত্তরপাড়ায় মিয়ানমারের শীলখালী গ্রামে এক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করে আনার উদ্যোগ নেয়ার ঘটনায় বর্তমানে গ্রামটি জুড়ে তোলপাড় চলছে। ইতিমধ্যেই কাবিননামাও সম্পাদন করা হয়েছে। বিষয়টি বেআইনী হলেও এতে সরকার দলীয় নেতা-কর্মী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সংশ্লিষ্টতায় এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উত্তরপাড়ার বহুল আলোচিত সাবেক মেম্বার লাল মোহাম্মদ চৌধুরীর (প্রকাশ-লালু চৌধুরী) ছেলে সাইফুল ইসলাম প্রকাশ উনাইয়্যা বিয়ে করেছেন মিয়ানমারের শীলখালী গ্রামের হাজী মো. দউলার মেয়ে জিয়াছমিন আক্তারকে। কনের বাবা হাজী মো. দউলা বর্তমানে সৌদী আরব প্রবাসী। মোটা অংকের যৌতুকের বিনিময়ে এই বিয়ে ঠিক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। গত ৪ জানুয়ারি কাঞ্জরপাড়া কাজী অফিসে জিয়াছমিন আক্তারকে বাংলাদেশি দেখিয়ে কাবিননামা সম্পাদন করা হয়েছে।
এদিকে, রোহিঙ্গা নারীকে বাংলাদেশী সাজিয়ে কাবিননামা সম্পাদন করার বিষয়ে জানতে চাইলে কাজী মাওলানা আক্তার কামাল নূরী কিছু জানেন না বলে জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে ‘বউ’ হিসাবে নারী পাচার করে আনাসহ বিভিন্ন অপকর্মের হোতা হোয়াইক্যং উত্তরপাড়ার মৃত কালা মিয়া বহদ্দারের দুই ছেলে আবদুল আমিন ও আবদুর রহমান। এই দুই ভাই চোরাচালানের পাশাপাশি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর আস্থাভাজন ও চর হিসাবে কাজ করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশী পত্রিকা, ম্যাগাজিনসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছে তারা নিয়মিত সরবরাহ করেন বলে জানা গেছে।
অপরাজিতাবিডিডটকম/আরএ/৫ফেব্রুয়ারী২৩৮ঘন্টা২০১৪