অপরাজিতাবিডি ডটকম, পঞ্চগড় : ঠাকুরগাঁও দেবীপুরে বসতবাড়ি রক্ষার জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েও বৃদ্ধ মা-বাবাকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছেন কলেজছাত্রী রুবা।
জিডি ও মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ১৫ নম্বর দেবীপুর ইউনিয়নে মৌলভীপাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের (৭৫) মেয়ে কলেজছাত্রী রুবা এই মর্মে অভিযোগ করেন যে, তার বাবা বর্তমানে খুবই অসুস্থ। তার জন্মের পর থেকে সাড়ে ১১ শতক জমির ওপর বাড়ি করে বসবাস করছেন। গত ২৪ জুলাই সকাল ৯টায় বসতবাড়ি মেরামতের জন্য কয়েকজন শ্রমিক লাগিয়েছেন।
এমন সময় চাচাতো ভাই আনিছুর রহমান, বাবা তফিজউদ্দিন এবং তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার, স্বামী আনিছুর রহমান আমাদের বসতবাড়িতে জমি পাবেন বলে কাজের শ্রমিকদের মারধর শুরু করে দিয়ে তাদের কাজের যন্ত্রপাতি নিয়ে যান। এ অবস্থায় রুবা ও তার বৃদ্ধ মা সালেহা (৬৫) কেন শ্রমিকদের মারা হচ্ছে জিজ্ঞাসা করলে, রুবা ও তার বৃদ্ধ মাকে অমানবিকভাবে মারধর করেন আনিছুর রহমান ও তার স্ত্রী সেলিনা আক্তার। আনিছুরের ভাই আজিজুল ইসলাম তার এ অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করতে গেলে তারও একটি হাতের আঙুল কেটে দেন আনিছুর।
রুবা বলেন, সেলিনা আক্তার আমার বৃদ্ধ মায়ের চুল ধরে অমানবিকভাবে লাঞ্ছিত করলে আমি এর প্রতিবাদ করতে গেলে তিনি আমাকেও মারধর ও লাঞ্ছিত করেন। সাবেক ১৫ নম্বর দেবীপুর ইউপির চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: নূর ইসলাম বলেন, বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ হওয়ায় স্থানীয়ভাবে আমিন নিয়ে এসে স্থানীয় সালিসে প্রমাণিত হয়েছে রুবা আক্তারের বাড়িতে আনিছুর জমি পাবেন না। এর পরও বাড়িঘরে হামলা করে আনিছুর অপরাধ করেছেন বলে মনে করি। রুবার বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার ছয় মেয়ে, পাঁচটি বিয়ে হয়েছে। আমি অসুস্থ, চলাফেরা করতে পারি না। ছেলে না থাকায় সম্পূর্ণ জবরদখল করার মানসিকতায় আনিছুর আমার সাথে বাড়াবাড়ি করছে। রুবার ভাগিনা রাশেদ (১২) বলে, আনিছুর মামা ও তার স্ত্রী সেলিনা মামী নানাবাড়িতে এসে আমাদের সবাইকে মারধর করছে।
আমি নানাবাড়ি থেকে পড়াশোনা করি। ঘটনার পর আনিছুর ও সেলিনা আক্তার পলাতক রয়েছেন। তার বাড়ি গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইলে বারবার ফোন করার পরও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। রুবা আক্তার বলেন, থানায় জিডি ও ইউনিয়ন পরিষদে মামলা করা পরও আনিছুর গং আমাদের বসতবাড়ি দখল করে নেবে, মারধর করবে এবং মিথ্যা মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে হয়রানি করার প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে।
মামলা তুলে নেয়ার জন্য প্রভাবশালীদের দিয়ে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়া চেষ্টা করছে। বাধ্য হয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানায় বসতবাড়ি রক্ষা ও জানমালের নিরাপত্তার জন্য গত ২৪ এপ্রিল ২০১৪ ইং থানায় একটি জিডি (১১৬৮ নম্বর) করি এবং ইউনিয়ন পরিষদে মামলা করেছি, আইনের আশ্রয় নিয়েছি বলেই আনিছুর-সেলিনার হুমকি-ধমকিতে আমিসহ বৃদ্ধ বাবা-মা নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। সদ্য নির্বাচিত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আলমগীর বলেন, এখনো শপথ হয়নি। শপথ হলেই রুবা আক্তারের বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের ঘটনা সরেজমিন তদন্তপূর্বক স্থানীয় প্রশাসনের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঝরনা (৪০) ও আয়েশাসহ (৪১) এলাকাবাসী রুবা আক্তারের বসতবাড়িতে হামলার ঘটনায় আনিছুর-সেলিনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন।
অপরাজিতাবিডি ডটকম/আরএ/এ/ ০৮ মে ২০১৪ই