banner

শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 11 বার পঠিত

 

বান্দরবানে শিক্ষা কর্মকর্তা দ্বারা নারী শিক্ষিকা লাঞ্ছনার স্বীকার

 

বান্দরবানে পর্দা ও নিকাব পরিধানের কারণে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী শিক্ষিকাকে মৌখিক পরীক্ষার সময় লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জল হোসেন খানের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি নিয়ে শিক্ষা মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, চিংকুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মাশরুফা সাঈদী তুন্না প্রাইমারি টিচার্স ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) প্রাথমিক শিক্ষকদের চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে গেলে কক্ষে প্রবেশের পর পর্দা নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তাঁর ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী পর্দা পরিধান করাকে কেন্দ্র করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ধর্মীয় কটাক্ষ ও অবমাননাকর মন্তব্য করেন এবং হুমকিও দেন যে, পর্দার কারণে অন্য একজন শিক্ষিকাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, কক্ষে উপস্থিত অন্য কর্মকর্তারাও এই আচরণের কোনো প্রতিবাদ করেননি। উল্লেখ্য, শিক্ষিকা তুন্না একজন অন্তঃসত্ত্বা নারী, যিনি প্রতিনিয়ত দুর্গম পাহাড়ি পথ অতিক্রম করে বিদ্যালয়ে পাঠদান করেন। তাঁর স্বামী তাঁর বদলির বিষয়ে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করছিলেন বলেও জানা গেছে।

ঘটনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদ এক বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা জানায়। তারা বলেন, এই ঘটনা শুধুমাত্র একজন নারীর ধর্মীয় অনুশাসনের প্রতি অবজ্ঞাই নয়, বরং তা নারীর মর্যাদা ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।

এদিকে, ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) বান্দরবান সদরের মুক্তমঞ্চ চত্বরে মানববন্ধনের আয়োজন করে সচেতন নাগরিক সমাজ। বক্তারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবিলম্বে বরখাস্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বান্দরবান প্রতিনিধি আসিফ ইকবাল, হাবিব আল মাহমুদ, মো. হাবিবুল্লাহ আফফান, রুমানা আক্তারসহ স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “স্বাধীন দেশে একজন নারী তাঁর ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী চলবেন এটাই স্বাভাবিক। সেখানে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা যদি এই স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেন, তবে তা পুরো জাতির জন্য লজ্জাজনক।”

ঘটনার তদন্ত ও দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর হস্তক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।

Facebook Comments