banner

বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫ ইং, ,

পোস্টটি 22 বার পঠিত

 

গরমে নারীর শরীরের বিশেষ সময়ে বিশেষ যত্ন কেন জরুরি

 

বাংলাদেশের মতো দেশে গরমকালের তাপদাহ শুধু অস্বস্তিই নয়, বরং কখনো কখনো তা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত হতে পারে। নারীর জীবনচক্রে এমন কিছু পর্যায় আছে—যেমন মাসিক, মেনোপজ, গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদান—যেগুলোতে শরীরের ভেতর হরমোনের নানা রকম পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের সময় শরীর এমনিতেই কিছুটা দুর্বল ও সংবেদনশীল হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে গরমের বাড়তি চাপ যুক্ত হলে শারীরিক অস্বস্তি, পানিশূন্যতা এবং রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে।

পিরিয়ড চলাকালে করণীয়
পিরিয়ডের সময় শরীর থেকে রক্তের সঙ্গে পানি ও লবণ বের হয়ে যায়। আবার গরমে অতিরিক্ত ঘামের মাধ্যমে আরও পানি বেরিয়ে যায়। এই সময়ে পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার না খাওয়া হলে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। এতে মাথাঘোরা, দুর্বলতা এমনকি মূর্ছা যাওয়ার মতো সমস্যাও হতে পারে। এই সময় পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও বিশেষভাবে যত্নবান হওয়া দরকার। স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়মিত বদলানো, শরীর শুকনো রাখা এবং ঘামে ভেজা কাপড় দ্রুত পাল্টে ফেলা জরুরি।

মেনোপজের পর
মেনোপজের পরে অনেক নারীর হঠাৎ করে গরম অনুভব হওয়া বা ঘাম দিয়ে জেগে ওঠার অভ্যাস তৈরি হয়। একে বলে “হট ফ্ল্যাশ”। এই সমস্যাগুলো গ্রীষ্মকালে আরও বেশি বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। তাই ঘরের তাপমাত্রা সহনীয় রাখার চেষ্টা করতে হবে। হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক পরা, মাথার পাশে অতিরিক্ত ফ্যান রাখা কিংবা ভেজা কাপড় দিয়ে মুখ ও শরীর মুছে নেওয়া কিছুটা আরাম দিতে পারে। রাতের বেলায় ঘাম হলে বালিশ উল্টে দেওয়া, কারণ বালিশের অপর পাশ তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা থাকে।

গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদান: বাড়তি সতর্কতা দরকার
গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানের সময় শরীরের পানির প্রয়োজন আরও বেশি হয়। গরমের মধ্যে ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে অনেক তরল ও লবণ বের হয়ে যায়, যা গর্ভবতী মায়ের শরীরের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। দিনে কয়েকবার লবণ মেশানো শরবত খাওয়া যেতে পারে, যদি চিকিৎসক এ বাপারে নিষেধ না করেন। নিরাপদ পানি ও টাটকা খাবার গ্রহণ করতে হবে, কারণ এই সময়ে হেপাটাইটিস ই-এর মতো সংক্রমণ মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। আরামদায়ক ও বাতাস চলাচলের উপযোগী পোশাক পরতে হবে। প্রয়োজনে দিনের সবচেয়ে গরম সময়টা ঘরের ভেতরে কাটানো উত্তম।

নারীর জীবনের এই প্রাকৃতিক সময়গুলোতে গরম আবহাওয়া সরাসরি শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় বাঁধা না দিলেও, বাড়তি অস্বস্তি ও জটিলতা তৈরি করে। তাই গরমে নারীর নিজের প্রতি বাড়তি যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।বিশেষ করে পানি গ্রহণ, পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা এবং পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে। পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও উচিত নারীদের এই সময়গুলোতে সহমর্মী ও সচেতন থাকা।

পাঠকের জন্য প্রশ্ন:
আপনার পরিবারের নারী সদস্যরা গরমে কোন ধরণের অস্বস্তিতে পড়েন? তাঁদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে আপনি কীভাবে সাহায্য করেন?

Facebook Comments